► ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ও ৩৫এ অনুচ্ছেদ বিলোপ করে ভারত সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে বিশেষ মর্যাদা হারায় উপত্যকা
► হরিয়ানা রাজ্যেও বিধানসভার নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে কমিশন। এক দফায় রাজ্যটির ৯০ আসনে ভোট নেওয়া হবে আগামী ১ অক্টোবর
ঠিক এক দশক পরে বিধানসভা ভোট হতে চলেছে জম্মু ও কাশ্মীরে। সর্বশেষ ভোট হয়েছিল ২০১৪ সালে। গতকাল বিকালে সাংবাদিক বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। দেশটির কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের ৯০টি আসনের জন্য মোট তিন দফায় ভোট নেওয়া হবে।
প্রথম দফায় আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর ২৪ আসনে, দ্বিতীয় দফায় ২৫ সেপ্টেম্বর ২৬ আসনে এবং তৃতীয় দফায় ১ অক্টোবর ৪০ আসনে ভোট নেওয়া হবে। ভোট গণনা আগামী ৪ অক্টোবর।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানান, জম্মু এবং কাশ্মীরে মোট ভোটারের সংখ্যা ৮৭.০৯ লাখ। এর মধ্যে ৪৪.৪৬ পুরুষ ভোটার, নারী ভোটার ৪২.৬২ লাখ। প্রথম ভোটারের সংখ্যা ৩.৭১ লাখ এবং নতুন প্রজন্মের ভোটার ২০.৭ লাখ। ভোট গ্রহণের জন্য ১১ হাজার ৮০০ কেন্দ্র খোলা হবে।
কমিশন আরও জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরের ৯০ আসনের মধ্যে ৭৪টি সাধারণ, সাতটি তফশিল জাতি এবং ৯টি তপশিল উপজাতি সংরক্ষিত আসন। নির্বাচন কমিশনার জানান, আমরা সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীর ও হরিয়ানা পরিদর্শন করেছি এবং এ জায়গাগুলোতে নির্বাচনি প্রস্তুতির পর্যালোচনা করেছি। নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। তারা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চায়।
সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনের সময় জম্মু-কাশ্মীরের ভোট গ্রহণ কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। উল্লেখ্য, পাঁচ বছর ধরে জম্মু-কাশ্মীরে কোনো নির্বাচিত সরকার নেই। ২০১৮ সালের ১৮ জুন মেহেবুবা মুফতির নেতৃত্বাধীন পিপল ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) বিজেপি জোট সরকার থেকে বেরিয়ে আসার পর থেকেই সেখানে কেন্দ্রীয় শাসন চলছে। সে ক্ষেত্রে দেশটির শীর্ষ আদালতের নির্দেশ ছিল চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটিতে বিধানসভার নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।
উপত্যকায় নির্বাচনের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের এক প্রতিনিধি দল সেখানে যায়। গত সপ্তাহে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছিলেন, জম্মু-কাশ্মীরে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন করার ব্যাপারে কমিশন বদ্ধপরিকর। সেখানকার মানুষ সংহতিনাশক শক্তিকে যোগ্য জবাব দেবে।
গত ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ও ৩৫এ অনুচ্ছেদ বিলোপ করে ভারত সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে বিশেষ মর্যাদা হারায় উপত্যকা। এ রাজ্য বিভক্ত করে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ- এ দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের সভাপতি ফারুক আবদুল্লাহ। কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, আমি নির্বাচনে লড়াই করব। আসন্ন নির্বাচনে আমরা একক প্রচেষ্টায় জয়ী হব।
জম্মু-কাশ্মীরের পাশাপাশি ভারতের হরিয়ানা রাজ্যেও বিধানসভার নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে কমিশন। একটি মাত্র দফায় রাজ্যটির মোট ৯০ আসনে ভোট নেওয়া হবে আগামী ১ অক্টোবর।
নির্বাচনের দিন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই কংগ্রেস জয়ী হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে। কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি উদয় ভান জানান, কমিশনের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি এবং আমরা প্রস্তুত আছি।