শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
ঐতিহ্য

লালমাই পাহাড়ে ‘সভ্যতার খোঁজ’

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

লালমাই পাহাড়ে ‘সভ্যতার খোঁজ’

প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনের খোঁজে কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের চূড়ায় খনন কাজ চলছে। কুমিল্লার কোটবাড়ী-কালিরবাজার সড়কের পাশে ‘হাতিগাড়া মুড়া’ নামে একটি পাহাড় চূড়ায় এ খনন কাজ শুরু হয়েছে। এ মুড়ার উচ্চতা প্রায় ১৫০ ফুট। আগামী দুই মাসব্যাপী খনন কার্যক্রম চলবে। এখানে প্রাচীনকালের নির্মিত মন্দির বা মূল্যবান প্রত্নবস্তু থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, লালমাই-ময়নামতি পাহাড় এলাকার ১১ কিলোমিটারের মধ্যে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর প্রাচীনকালের প্রত্নবস্তু-নিদর্শন উন্মোচনের জন্য ৫৪টি সাইট বাছাই করে। এর মধ্যে ২৩টি সাইট খননযোগ্য অবস্থায় রয়েছে। এ ২৩টি পুরাকীর্তির মধ্যে বিভিন্ন সময়ে শালবন বিহার, রূপবান মুড়া, কুটিলা মুড়া, ইটাখোলা মুড়া, লতিকোট মুড়া, ময়নামতির রানীর বাংলো, ময়নামতি মাউন্ট-১ এর বি, ময়নামতি মাউন্ট-২, আনন্দ বিহার, ভোজ বিহার, চারপত্র মুড়াসহ ১১টি মুড়া খনন করা হয়েছে। এসব খননের মাধ্যমে মূল্যবান প্রত্নবস্তু পাওয়া গেছে। অপর ১২টি সাইট এ পর্যন্ত খনন করা হয়নি। এ বছর ২৮ জানুয়ারি নতুন করে লালমাই পাহাড়ের কোটবাড়ী এলাকার হাতিমারা এলাকায় ‘হাতিগাড়া মুড়া’ খননের উদ্যোগ গ্রহণ করে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। এ বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রধান মো. সোহরাব উদ্দিন জানান, খননের মাধ্যমে প্রাচীনকালের শিলালিপি, মুদ্রা, ভাস্কর্য, টেরাকোটা, মৃৎপাত্রসহ অন্যান্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র আবিষ্কৃত হয়। এতে আমরা প্রাচীন মানুষের জীবন ব্যবস্থা, ধর্ম-সমাজ-সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারি। পদ্ধতিগত প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান ও খনন হলে লালমাই-ময়নামতিতে আরও প্রাচীন নিদর্শন প্রাপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে। এ প্রক্রিয়া কুমিল্লার সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করার সঙ্গে বাংলার সংস্কৃতিকেও বিশ্বের দরবারে সমুন্নত করবে। এ বিষয়ে ময়নামতি জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান আহমেদ আবদুল্লাহ জানান, আমাদের ২৩টি প্রত্নতত্ত্ব সাইটের মধ্যে ১১টি খনন করা হয়েছে। অপর ১২টির মধ্যে হাতিগাড়া মুড়ার খনন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ যাবৎকালে খননের মাধ্যমে লালমাই-ময়নামতি এলাকায় ষষ্ঠ শতক থেকে ১২০০ শতক পর্যন্ত প্রাচীন পুরাকীর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর