ফুটবল দিয়ে শারীরিক বিভিন্ন কসরত ও ক্যারিশমা দেখিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড বুক অব রেকর্ডে ছয়বার নাম তুললেন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর সন্তান অন্তর কর্মকার। ছোটবেলা থেকে ফুটবলে অন্যরকম ভালোবাসা অন্তরের। ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। বাসায় বসে কী করবেন বুঝতে পারছিলেন না তিনি। কলেজশিক্ষার্থী অলস সময়ে ইউটিউবে ভিডিও দেখতে দেখতে হঠাৎ ফুটবল ফ্রি স্টাইলের একটা ভিডিও তার সামনে আসে। তিনি দারুণ আগ্রহ নিয়ে অনুপ্রাণিত হন। এ ধরনের নিত্যনতুন ভিডিও দেখতে শুরু করেন। পরে ফুটবল নিয়ে শারীরিক কসরতে মন দেন। আয়ত্ত করেন ফুটবল ফ্রি স্টাইলের নানা ক্যারিশমা। কখনো মাথায়, কখনো কানে, কখনো ঘাড়ে, কখনো পায়ে আবার কখনো শূন্যে রেখে ফুটবলের নানা ক্যারিশমা দেখান অন্তর কর্মকার। সকাল-বিকাল অসংখ্য উৎসুক মানুষ তার এসব ক্যারিশমা দেখতে আসেন। অন্তরের প্রথম সফলতা আসে ২০২৩ সালের ১৪ জুলাই। ৩০ সেকেন্ড ফুটবল মাথায় রেখে ৫২ বার রোল করে গিনেস ওয়ার্ল্ড বুক অব রেকর্ডে ফুটবল ক্যাটাগরিতে নাম তোলেন। এরপর একই মাসের মধ্যে ৩০ সেকেন্ডে ৮২ বার মাথায় ফুটবল আর্ম রোল করে দ্বিতীয়বার রেকর্ড বুকে নাম তোলেন তিনি। তৃতীয় রেকর্ড আসে ২০২৪ সালে। ৩০ সেকেন্ডে বাস্কেটবল ২৭ বার নেক ক্যাচ করে এ রেকর্ড করেন তিনি। চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ রেকর্ড আসে এক দিনে। চতুর্থ রেকর্ড ছিল এক মিনিটে ১৬৪ বার ফুটবল আর্ম রোল করে। পঞ্চম রেকর্ড ছিল বাস্কেটবলে, ৩০ সেকেন্ডে ৩১ বার নেক ক্যাচ ধরে। আর ষষ্ঠ রেকর্ডটি ছিল ১৬৭ বার টানা সবচেয়ে বেশি বাস্কেটবল আর্ম রোল করে। অন্তর কর্মকারের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার দৈয়ারা গ্রামে। নোয়াখালী সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। ১০ বছর আগে তার বাবা মারা যান। দুই ভাই, দুই বোনসহ চারজনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। তার স্বপ্ন তিনি এক দিন আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের সুনাম বয়ে আনবেন। অন্তর কর্মকার বলেন, ছোটবেলা থেকে ফুটবল নিয়ে শখ ছিল। করোনার সময় ইউটিউব দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে প্র্যাক্টিস শুরু করি। প্রাইভেট টিউশনির টাকা দিয়ে ফুটবল কিনে প্র্যাক্টিস করি। সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা ও পরামর্শ পেয়েছি আমার মামা কনক কর্মকারের কাছ থেকে। আমার এখন একটাই লক্ষ্য, আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন পরিসরে ফুটবল ফ্রি স্টাইলে অংশগ্রহণ করা এবং বাংলাদেশের পতাকাকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরা। তার সহপাঠী ও স্থানীয়রা জানান, নোয়াখালীর সন্তান অন্তর কর্মকার লাল সবুজের পতাকাকে সম্মানিত করেছেন। তিনি আমাদের গর্ব। সরকারের পাশাপাশি ক্রীড়া মন্ত্রণালয়সহ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলে তিনি আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবেন এবং দেশের সুনাম বয়ে আনবেন, এমনটাই প্রত্যাশা।