এক সময় গোয়ালিয়র ছিল ভারতীয় দলের জন্য পয়া ভেন্যু। ভারতীয় হকি খেলোয়াড় রূপ সিংয়ের নামে স্টেডিয়ামের নাম ছিল। এ স্টেডিয়ামে প্রধানত হকিই খেলা হতো। পরবর্তীতে ক্রিকেট খেলা শুরু হয়। ১৯৮৮ সালে এই মাঠে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দিয়ে গোয়ালিয়র থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বিদায় নেয়। দীর্ঘ সাড়ে চৌদ্দ বছর পর এ শহরে আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরছে বাংলাদেশ-ভারত টি-২০ ম্যাচ দিয়ে।
গোয়ালিয়র ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছে শচীন টেন্ডুলকারের জন্য। এ শহরেই ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেন শচীন ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। কেবল শচীন টেন্ডুলকারই নন, এ মাঠে সেঞ্চুরি করেছেন ভারতের সৌরভ গাঙ্গুলী (১৫৩*), নভজোত সিং সিধু এবং ভিভিএস লক্ষ্মণ। ডাবল সেঞ্চুরি ছাড়া শচীনের আরও একটি সেঞ্চুরি আছে এ শহরে (১০০)। পয়া এ শহরে দীর্ঘদিন পর খেলতে নামবে ভারত। টি-২০ ক্রিকেট হিসেব করলে প্রথমবারের মতো খেলতে নামবে। এমনকি নতুন করে নির্মিত শ্রীমন্ত মাধবরাও সিন্দিয়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অভিষেক হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। এদিক দিয়ে নাজমুল হোসেন শান্তরাই প্রথম।
গোয়ালিয়রের নতুন এই স্টেডিয়ামে গত বছর মধ্যপ্রদেশ টি-২০ ক্রিকেট লিগ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বোচ্চ ২৭৮ রান হয়েছে এ মাঠে। সর্বনিম্ন হয়েছে ৫১ রান। তবে ২০০ রানের ওপরে ইনিংস ছিল চারটি। ১৯০ রানের ওপর ইনিংস ছিল চারটি। এ ছাড়া বাকি ম্যাচগুলোতে বেশ রান হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচেও রানের বন্যা হতে পারে! এ মাঠে খেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। টি-২০ দলে আছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তাকে নিয়ে নানান আলোচনা চলে। কবে অবসরে যাবেন, এ প্রশ্নটা প্রায় নিয়মিতই করা হয়। গতকাল বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে প্রশ্নটা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমি যতটুকু বুঝতে পারি, রিয়াদ ভাইয়ের জন্য এ সিরিজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং হয়তো উনি নির্বাচকের সঙ্গে কথাও বলবেন। এ বিষয়ে আমি খুব একটা পরিষ্কার না। কিন্তু আমার মনে হয় যে, অবশ্যই নির্বাচক ও বোর্ডের সঙ্গে একটা আলোচনা তো হবেই।’ সেই আলোচনাটা হয়তো অবসর নিয়েই! আপাতত ড্রেসিং রুমে মাহমুদুল্লাহর অবসর নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানালেন নাজমুল।
কাল গোয়ালিয়রের শ্রীমন্ত মাধবরাও সিন্দিয়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজের প্রথমটি খেলতে নামবে বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজটা খুবই বাজে গেল নাজমুলদের। চেন্নাইতে বড় ব্যবধানে পরাজয়ের পর কানপুরে গিয়ে আরও বাজেভাবে পরাজিত হয় তারা। দুই দিনের বেশি বৃষ্টিতে ভেসে গেলেও ম্যাচটা ড্র করতে পারেনি বাংলাদেশ। এমন এক পরাজয়ের পর নানা ধরনের সমালোচনার মুখে পড়েছে নাজমুল বাহিনী। অনেকেই বলছেন, নিজেদের ক্রিকেট মানের সত্যিকারের অবস্থাটা বুঝতে পেরেছে বাংলাদেশ। সত্যিই কী বাংলাদেশ এই মানের! কিছুদিন আগে পাকিস্তানকে তাদেরই মাটিতে হারিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। এরপর ভারতের মাটিতেও ভালো কিছুর আশা করেছিলেন সমর্থকরা। টেস্টে তা হয়নি। টি-২০ ক্রিকেটে হবে কি! দুই দলেই বেশ কিছু পরিবর্তন আছে। টি-২০ ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া সাকিব নেই বাংলাদেশ দলে। ভারতেও নেই রোহিত শর্মারা। পরিবর্তিত দল নিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের টি-২০ লড়াইয়ে কী হয় তাই দেখার বিষয়। তবে প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি রাখছে না বাংলাদেশ। হাথুরাসিংহের অধীনে নিজেদের সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করছে টাইগাররা।
ভারতের বিপক্ষে টি-২০ ক্রিকেটে একবারই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৯ সালের নভেম্বরে দিল্লিতে ৭ উইকেটে ভারতকে হারিয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহরা। দিল্লি জয়ের সেই সুখস্মৃতি কি ফিরবে গোয়ালিয়রে!