ফিল সিমন্স, ওয়েস্ট ইন্ডিজের খুব বড় তারকা ক্রিকেটার নন। কিন্তু ক্রিকেট ক্যারিয়ারে খেলেছেন স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস, ক্লাইভ লয়েড, গর্ডন গ্রিনিজ, মাইকেল হোল্ডিংদের মতো বড় বড় তারকা ক্রিকেটারদের সঙ্গে। ক্রিকেট ক্যারিয়ারে হার্ড হিটিং ব্যাটিং করতেন। প্রয়োজনে মিডিয়াম পেস বোলিংও করতেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং অলরাউন্ডার ক্যারিয়ার শেষে কোচিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। ক্রিকেটার সিমন্সের চেয়ে কোচ সিমন্সের পরিচিতি বেশি। নিজ দেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কোচিং করিয়েছেন দুইবার। ছিলেন আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের কোচ। এবার তার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, তাসকিন আহমেদদের দায়িত্ব। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ পর্যন্ত টাইগারদের অন্তর্বর্তী কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সিমন্স। গতকাল বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ টাইগারদের অন্তর্বর্তী হেড কোচ হিসেবে ক্যারিবীয় অলরাউন্ডারের নাম ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা, আফগানিস্তান সিরিজ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অন্তর্বর্তী হেড কোচ নিয়োগ দেওয়ার। নতুন অন্তর্বর্তী হেড কোচ হিসেবে ফিল সিমন্স চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত কাজ করবেন।’ সিমন্সকে কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ক্রিকেটারদের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য বরখাস্ত করায়।
ওয়ানডে বিশ্বকাপ চলাকালীন টাইগার বাঁ হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে থাপ্পড় মারেন। শুধু নাসুমকে নয়, দলের অন্য ক্রিকেটারদের সঙ্গেও তার সম্পর্ক ছিল শীতল। যার প্রভাব পড়ত পারফরম্যান্সের ওপর। এছাড়া চুক্তির বাইরে ছুটি কাটাতেন। বিসিবির নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ফারুক স্পষ্ট করে জানিয়েছিলেন, হাতুরাসিংহ অধ্যায় শেষ হচ্ছে। গতকাল শোকজ করে ৪৮ ঘণ্টার জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে হাথুরাসিংহকে। এরপর অব্যাহতি দেওয়া হবে শ্রীলঙ্কান বংশোদ্ভূত কোচকে। মিরপুর স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলন করে বরখাস্তের কথা বলেন বিসিবি সভাপতি, ‘বরখাস্ত করার আগে আমরা তাকে নিয়ম মেনে শোকজ নোটিস করেছি। ৪৮ ঘণ্টার জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে তাকে। এরপর আমরা বরখাস্ত করব। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত কোচ ফিল সিমন্স।’ হাথুরাসিংহে দুই মেয়াদে টাইগাদের কোচ ছিলেন। এবার তার মেয়াদ ছিল ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কিন্তু চার মাস আগে তাকে বহিষ্কার করা হলো। তাকে মূলত বহিষ্কার করেছে অসদাচরণের জন্য। বলেন বিসিবি সভাপতি, ‘দুই তিনটি ঘটনা ঘটেছে, যেগুলো আসলে একজন সাবেক খেলোয়াড় হিসেবে আমার জন্য খুব পীড়াদায়ক ছিল। পাশাপাশি এটা দলের জন্যও খুব একটা ভালো উদাহরণ ছিল না। সেগুলো বিবেচনা করে আজকে আমরা তাকে একটা কারণ দর্শানো নোটিস এবং দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির চিঠি দিয়েছি।’ ডানহাতি সিম বোলার ও আপার অর্ডার ব্যাটার সিমন্স ক্যারিয়ারে ২৬ টেস্টে ১০০২ রান এবং ১৪৩ ওয়ানডেতে ৩৬৭৫ ও ৮৩ উইকেট নেন। তাকে নেওয়ার ব্যাখ্যায় বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘সিমন্স কঠোর পরিশ্রমী। তার কাজের ধরন আমি দেখেছি। যখন জিম্বাবুয়ে খেলতে এসেছিল, আমি ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করেছি। কীভাবে সে চিন্তা করে এবং অনুপ্রেরণা জোগায় সেটা নিয়ে কথা হয়েছে। এগুলো দেখে আমার ভালো লেগেছে। তার প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। সবকিছু মিলিয়ে এখন সেরা অপশন।’ সিমন্সের কোচিং ক্যারিয়ার শুরু জিম্বাবুয়ের কোচ হয়ে।
এরপর আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড, পাপুয়া নিউ গিনিকেও কোচিং করিয়েছেন। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ, পিএসএলসহ নানা টুর্নামেন্টে বিভিন্ন পদবিতে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে ক্যারিবীয় এই কোচের। নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এবার বাংলাদেশে আসছেন সিমন্স।
তার আগে বাংলাদেশের ক্যারিবীয় কোচ ছিলেন গর্ডন গ্রিনিজ ও কোর্টনি ওয়ালশ।