মুলতান টেস্টে খেলার সুযোগ পাননি দুই স্পিনার নোমান খান ও সাজিদ খান। ইংল্যান্ডের কাছে হেরেছিল শান মাসুদের দল। সেই মুলতানেই একাদশে একাধিক পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে স্বাগতিকরা। এরপর ইতিহাস। নোমান-সাজিদের স্পিন জাদুতে বাজিমাত। বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের হাতে শেষ তিনটি টেস্টে লাঞ্ছিত হয়েছিল পাকিস্তান। মুলতান জয়ের পর বলাই যায়, ফিনিক্সের মতো মাথা তুলে দাঁড়িয়েছেন শান মাসুদরা। কয়েক দিন আগে যে পিচে সফরকারী ইংল্যান্ডের কাছে পাকিস্তান লজ্জাজনক হারের মুখ দেখেছিল, সে পিচেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে দাপুটে জয় পেলেন শান মাসুদ, কামরান গোলামরা। দুই স্পিনারের ২০ শিকারে ব্রিটিশদের ১৫২ রানে হারিয়ে সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরেছে পাকিস্তান। শান মাসুদের নেতৃত্বে টানা ছয় টেস্ট হারের পর অবশেষে জয়ে ফিরল তারা।
এ স্মরণীয় কামব্যাকে একটি রেকর্ডও তৈরি করল তারা। যে পাকিস্তান পরিচিত পেস বোলিংয়ের জন্য তারা এবার স্পিন বোলিংয়ে বাজিমাত করল। এক টেস্টে দুই স্পিনারই নেন ২০টি উইকেট। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ১৯৭২ সালের পর এ রেকর্ড তৈরি করল কোনো পাকিস্তানি জুটি। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে করে ২৯১ রান আর দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৪ রান। দুই ইনিংসেই ইংল্যান্ডের উইকেট নেন দুজন স্পিনার। একজন সাজিদ খান, অন্যজন নোমান আলি। প্রথম ইনিংসে সাজিদ খান ১১১ রানে নেন ৭ উইকেট আর ১০১ রানে নোমান আলি নেন ৩টি। দ্বিতীয় ইনিংসে দুই বোলারের ওপরই ভরসা করে পাকিস্তান। তবে এবার বাজিমাত করেন নোমান আলি। তিনি ৪৬ রানে ৮ ও সাজিদ খান ৯৩ রানে নেন ২টি। গোটা টেস্টে সাজিদ খান নেন মোট ৯টি ও নোমান ১১টি উইকেট। ম্যাচসেরা হন সাজিদ।
ইংল্যান্ডের কাছে প্রথম টেস্টে হারের পর দ্বিতীয় টেস্টে দলে পরিবর্তন আনে পাকিস্তান। ছন্দে না থাকায় বাবর আজম, শাহিন আফ্রিদি ও নাসিম শাহ বাদ পড়েন। তাদের জায়গায় নতুনদের এনে সাফল্য পেয়েছে দলটি। এ সুযোগে নতুনরাও নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। বাবরের পরিবর্তে খেলা কামরান গোলাম অভিষেক টেস্টেই পান শতক। টেস্টে সাফল্যের নেপথ্যে প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের কোমর ভেঙে দেন সাজিদ খান। উইকেটের মধ্যে ছিলেন বেন ডাকেট, অলি পোপ, হ্যারি ব্রুক ও জো রুটের মতো টেস্ট স্পেশালিস্টরা।
দ্বিতীয় ইনিংসের নায়ক নোমান আলি ৪৬ রানে ৮ উইকেট নিয়ে রেকর্ড বইয়ে নাম তোলেন। পাকিস্তানের ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে ৩৮ বছর পর এ স্বাদ পেলেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান প্রথম ইনিংস : ৩৬৬
ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস : ২৯১
পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস : ২২১
ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস : (লক্ষ্য ২৯৭, আগের দিন ৩৬/২) ৩৩.৩ ওভারে ১৪৪ (পোপ ২২, রুট ১৮, ব্রুক ১৬, স্টোকস ৩৭, স্মিথ ৬, কার্স ২৭, পটস ৯*, লিচ ১, বাশির ০; সাজিদ ১৭-০-৯৩-২, নোমান ১৬.৩-১-৪৬-৮।
ফল : পাকিস্তান ১৫২ রানে জয়ী।
সিরিজ : তিন ম্যাচ সিরিজের দুটি শেষে ১-১ সমতা।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : সাজিদ খান।