কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল। এই হাসপাতালের আঙিনা থেকে অ্যাম্বুলেন্স চক্র কিছুতেই সরাতে পারছে না হাসপাতাল প্রশাসন। এদিকে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চক্রের কবলে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছেন রোগীরা। স্থানীয় সূত্র জানায়, আগে এই চক্রের নিয়ন্ত্রণ ছিল কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল-মাহমুদ সহিদের হাতে। সরকার পরিবর্তনের পর সহিদ পালিয়ে গেছেন। এখনো অন্য কোনো রাজনৈতিক শক্তি এখানে জায়গা নিতে পারেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় ফাঁকা মাঠ পেয়ে সেটি দখলে নিয়েছেন হাসপাতালের হিসাবরক্ষক আবুল খায়েরের পরিবার। তার ভাই বারেক, ভগ্নিপতি কালাম, ভাতিজা মোজাম্মেল ও ভাগিনা হৃদয় অ্যাম্বুলেন্স ব্যবসা করেন। এখানে তারা যা বলেন, তা-ই আইন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চালক জানান, স্থানীয় হওয়ায় তাদের আঙিনা থেকে বের করা যায় না। কিছু নার্স ব্রাদারকে কমিশন দিয়ে তারা রোগী ধরেন। স্থানীয় আবুল খায়েরের প্রভাব খাটিয়ে তার আত্মীয়রা এখানে সাধারণ চালক ও রোগীদের হয়রানি করেন। চিকিৎসক নেই বলে রোগীদের ভুল বুঝিয়ে অখ্যাত হাসপাতালে নামিয়ে দিয়ে কমিশন নিয়ে আসেন। এ ছাড়া ৫০০ এর স্থলে ৫০০০ টাকা ভাড়া আদায় করেন। কোনো চালক বা রোগী প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়।
বরুড়ার কামাল হোসেন নামের একজন রোগীর স্বজন জানান, এখানে অ্যাম্বুলেন্স চালকরা রোগী নিয়ে টানাটানি শুরু করেন। তাদের আঙিনার বাইরে রাখা প্রয়োজন। এ ছাড়া একটা নির্দিষ্ট ভাড়া ঠিক করে তাদের শৃঙ্খলায় আনা প্রয়োজন।
অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক মো. আবুল খায়ের বলেন, তার কোনো স্বজন বা তিনি অ্যাম্বুলেন্স চক্রের সঙ্গে জড়িত নন। এগুলো অপপ্রচার। তিনিও চান সাংবাদিকরা যেন অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে লেখালেখি করেন।
কুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. মাসুদ পারভেজ বলেন, আমরা চেষ্টা করছি তাদের শৃঙ্খলায় আনতে। তবে পুলিশ প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। হিসাবরক্ষক আবুল খায়ের জড়িত থাকার বিষয়ে বলেন, তিনিও তার বিষয়ে কিছু অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।