২৬ মে, ২০২২ ১৫:৪১

বগুড়ায় গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধি, বিপাকে অর্ধলাখ খামারি

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

বগুড়ায় গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধি, বিপাকে অর্ধলাখ খামারি

বগুড়ায় গবাদিপশুর খাবারের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন অর্ধলাখ গবাদিপশুর খামারি। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পচে নষ্ট হয়ে গেছে গরুর খাদ্য খড়। আর এই সুযোগে বিনা অজুহাতে গো খাদ্য বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে জেলায়। অধিক মূল্যে গো খাদ্য কিনে লোকসানের মুখে পড়তে পারে খামারিরা।

বগুড়া জেলা শহরের নামাজগড় এলাকায় গো খাদ্য বিক্রি হয়ে থাকে। গো খাদ্য আগে যে দামে বিক্রি হতো তার চেয়ে ২০ থেকে ৪০ টাকা করে কেজিতে বেড়েছে। আর বস্তা প্রতি গো খাদ্যের দাম বেড়েছে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা করে। এই অধিকদামে গো খাদ্যগুলো ক্রয় করে খামারে গরু লালন পালন করে লোকসান হবে বলে আতঙ্কে রয়েছে খামারিরা।

বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বগুড়ায় রয়েছে প্রায় ৫০ হাজার খামারি।

সারিয়াকান্দির বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, গত ৫ দিন আগে ভূষির দাম ছিল প্রতি কেজি ৪০ টাকা, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। খুদ বিক্রি হতো ৩০ টাকা কেজি, এখন তা ৩৬ থেকে ৪০ টাকা কেজি। চালের কুঁড়া আগে ছিল ১৬ টাকা কেজি, এখন ২০ টাকা কেজি। ক্যাটল ফিড ছিল ৮০০ টাকা বস্তা, এখন তা বেড়ে গিয়ে হয়েছে ১৩০০ টাকা।

উপজেলার কৃষকরা বলছেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তাদের গাদা করে রাখা খড়গুলো শুকাতে না পেরে পচে নষ্ট হয়ে গেছে। অপরদিকে দুধের দামও কমে গেছে। ফলে বিপাকে পরেছেন উপজেলার খামারিরা।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার পারতিত পরল গ্রামের গরুর খামারি আমজাদ হোসেন জানান, প্রতি ৪ দিনে তার খামারে ১ বস্তা ভূসি, ১ বস্তা ফিড, চালের কুঁড়া, খুদ ও অন্যান্য খরচসহ তার ১০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। অপরদিকে দুধ বিক্রি করে ৪ দিনে তার আয় হয় ৫ হাজার ৭০০ টাকা হতে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৯৮০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিদিন খামারে ব্যাপকভাবে লোকসান হচ্ছে। এখন খামারের গরুগুলো বিক্রি করে দেয়ার চিন্তাভাবনা করছি।

সারিয়াকান্দি উপজেলার পৌর এলাকার আন্দরবাড়ী গ্রামের খামারি বেলাল হোসেন জানান, গত কয়েকদিন আগে ৯ হাজার টাকার বোরো ধানের কাঁচা আটি ক্রয় করেছিলেন। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তার অর্ধেক খড় পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে।

সারিয়াকান্দির নারচী ইউনিয়নের দেবের পাড়ার খামারি আরিফুর রহমান জানান, তার খামারে ৫৫টি গরু রয়েছে। গত ১ মাস আগে তিনি প্রতি বস্তা চিকন ভূসি ১৬০০ টাকা বস্তা দরে ক্রয় করতেন এখন তা ক্রয় করছেন ২৮০০ টাকা, ক্যাটল ফিড প্রতি বস্তা ক্রয় করতেন ৮০০ টাকা এখন তা ক্রয় করছেন ১৩০০ টাকা। তিনি বলেন, এভাবে প্রতিদিন ভূসিসহ গরুর অন্যান্য খাবারের দাম বাড়তে থাকলে খামার টিকিয়ে রাখা মুশকিল হবে। গরুগুলো নিয়ে এখন খুব বিপাকে আছি।

সারিয়াকান্দি প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য মতে, উপজেলাতে সর্বমোট ১৭৩টি বড় গরুর খামার এবং ১ হাজার ২০০টি ছাগলের খামার, ৩৫টি ভেড়া ও গাড়লের খামার এবং চরাঞ্চলে অনেক ঘোড়া ও মহিষ রয়েছে। এ হিসেবে সমগ্র উপজেলায় সর্বমোট ১ লাখ ২০ হাজার গরু, ৭৩ হাজার ৫০০টি ছাগল এবং ৩ হাজার মহিষ রয়েছে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শাহ আলম বলেন, নানা কারণে গবাদিপশুর খাবারের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বিষয়ে খামারিদের বেশি করে ঘাস চাষ করার জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। 


বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর