সন্তানের প্রতি মায়ের মমতা-ভালোবাসা অমূল্য- এ কথা প্রাণী মাত্রেই অনস্বীকার্য। সুখে-দুঃখে সীমাহীন নিঃস্বার্থে মায়ের ভূমিকা অপরিসীম। এমনি একটি দুর্লভ চিত্রের দেখা মিলেছে সাহেব বুলবুলি নামে একটি পাখির ক্ষেত্রে।
সম্প্রতি রংপুর নগরীর উপকণ্ঠ থেকে মায়ের ভালোবাসার ছবিটি তুলেছেন রংপুরের বিশিষ্ট লেখক ও শৌখিন আলোকচিত্রী রানা মাসুদ। তিনি তার ক্যামেরায় তুলে এনেছেন- কীভাবে বাচ্চাদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন মা। এই পাখিটির নাম সাহেব বুলবুলি হলেও একে স্বর্গীয় দুধরাজ ও শাহ বুলবুলি বলেও ডাকেন অনেকে।
এই পাখিটি সম্পর্কে জানা গেছে, মধ্যম আকৃতির প্যারাডাইস বার্ড। এরা দেখতে অনেকটা বুলবুলির মতো; কিন্তু লম্বা লেজ দেখে এদের সহজেই চেনা যায়। পূর্ণবয়স্ক শাহ বুলবুলি ১৯-২০ সেমি লম্বা হয়। পূর্ণবয়স্ক পুরুষ রং পরিবর্তন করে সাদা বর্ণ ধারণ করে। মাথা থেকে গলার অংশটা তখন আরও নীলচে কালো দেখায়। মে থেকে জুলাই মাস এদের প্রজননকাল। প্রজননকালে এরা অনেকটা কাপের মতো বাসা তৈরি করে। এর পর স্ত্রী পাখি তিন থেকে চারটি ডিম পাড়ে। ১৪-১৫ দিনেই ডিম ফোটে। মা-বাবা উভয়ই বাচ্চাদের যত্ন করে। বাচ্চারা ১৬ থেকে ১৯ দিনে বড় হয় ও উড়তে শিখে যায়। তিন-চার বছর বয়সে এরা রং বদলে সাদা-কালো হয়ে ওঠে। সাধারণত ৮ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত বাঁচে সাহেব বুলবুলি। রানা মাসুদ বলেন, এই পাখি বেশ চঞ্চল স্বভাবের। কোথাও বেশিক্ষণ স্থির হয়ে থাকতে পারে না। পাখিটি দেখতে হলে খুব ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। এই পাখি-দম্পতি একসঙ্গে থাকতে খুব ভালোবাসে। ঘাস, লতাপাতা, মাকড়সার জাল দিয়ে বানানো বাসা দূর থেকে খুব সুন্দর দেখায়। এদের প্রিয় খাবার বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়। এরা পরম মমতায় সন্তানের মুখে খাবার তুলে দেয়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই