চীনে নয়, বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় জুজুবি ফল চাষ করে তাক লাগিয়েছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা রেজোয়ানুল ইসলাম। ব্যতিক্রমী এই ফলের ৭০টি গাছ নিয়ে গবেষণা করে তিনি সাফল্যের স্বপ্ন দেখছেন। উত্তরাঞ্চলে প্রথমবারের মতো জুজুবি চাষ করে সাড়া ফেলেছেন তিনি। কেউ আসছেন বাগান দেখতে, কেউ নিচ্ছেন পরামর্শ, আবার কেউ ফল খেয়ে স্বাদ নিচ্ছেন।
চাষটি জনপ্রিয় হলে সৌদি খেঁজুরের বিকল্প হিসেবে দেশে জুজুবি খাওয়া যাবে বলে মনে করেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। এতে কৃষকরা লাভবান হবেন এবং দেশজুড়ে ব্যাপক সাড়া পড়বে।
জানা গেছে, জুজুবি একটি ছোট কাটাযুক্ত গাছ। চীন থেকে কাটিং এনে তিন বছর আগে এর চাষ শুরু করেন রেজোয়ানুল। এখন তার বাগানে ফুল ও ফল ধরে। বরই গাছে চায়না থেকে আনা কাটিং কলম করে দ্রুত ফলনশীল গাছ তৈরি করেছেন তিনি। তিন মাসের মধ্যেই গাছে ফল আসে এবং চার থেকে পাঁচ মাসে তা পরিপক্ব হয়। ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজে সমৃদ্ধ এই ফল কাঁচা অবস্থায় আপেলের মতো, আর পাকলে খেঁজুরের মতো লাল বা বেগুনি হয়। সহজে রোদে শুকিয়ে দুই বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। একেকটি গাছ ১০-১৫ বছর পর্যন্ত ফলন দেয়। প্রাথমিকভাবে বছরে ২-২.৫ মণ ফল মিললেও পূর্ণবয়স্ক গাছে ২০-২৫ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব। রেজোয়ানুলের দাবি, দেশে নতুন হওয়ায় এ ফলের কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি করা যাবে। তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমরা শুনেছিলাম খেঁজুর না জুজুবি- এ নিয়ে বিভ্রান্তি। তখনই চিন্তা করলাম বাংলাদেশে এটা আনা যায় কি না। তিন বছর গবেষণার পর সফল হয়েছি।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার উপপরিচালক সোহেল মো. শামসুদ্দীন ফিরোজ বলেন, ‘জুজুবি বিদেশি ফল হলেও দেশীয় মাটিতে দারুণ ফলন দিচ্ছে। ব্যাপক আবাদ হলে খেঁজুরের ঘাটতি পূরণে সহায়ক হবে। এতে কৃষক লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে।’
বিডি প্রতিদিন/এমআই