আগাম জাতের আলু ঊঠানো শুরু হয়েছে এবং বাজারে সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় কম উৎপাদন খরচে আলুর বাম্পার ফলন ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় দিনাজপুরের কৃষকরা খুশি। আলুর ক্ষেত থেকে পাইকাররা ৫৭ টাকা কেজি দরে আলু নিয়ে যাচ্ছে। তবে আর ১০দিন আগে আলুটা ঊঠিয়ে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি করতে পারলে আরও লাভবান হওয়া যেত বলে কৃষকরা জানায়।
আলুর যে প্রধান রোগ লেদ লেইট ব্লাইট, এবার আগাম জাতের আলুতে সেই রোগটি নেই। তাই আগামী মৌসুমে আগাম জাতের আলুর চাষ আরও বাড়বে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।
দক্ষিণ নগর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, লাভের আশায় এক বিঘা জমিতে সাতটি জাতের আলু রোপন করি। ক্ষেত থেকে পাইকাররা ৫৬ টাকা কেজি দরে আলু নিয়ে যাচ্ছে।
কৃষক মো. এনতাজুল হক বলেন, আমি তিন বিঘা জমিতে আগাম জাতের সাতটি জাতের আলু চাষ করছি। তিন বিঘা জমিতে সব মিলে খরচ হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। জমির আলু বিক্রি করেছি সাড়ে ৫ লাখ টাকার। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়েও আমার ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা লাভ। আমি ৬০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করছি।
কৃষক ছাদেকুল ইসলাম বলেন, এক বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু লাগিয়েছি। আলুর বীজের দাম বেশি থাকায় এক বিঘা জমিতে ৬৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আলু বিক্রি হবে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। বীজের দামটা কম থাকলে আরও বেশি লাভ হতো।
চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, চলতি মৌসুমে চিরিরবন্দরে ৩ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। আগাম জাতের আলু ৬৫ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে তুলতে পারেন কৃষকরা। সাধারণত সেক্টর প্রতি আগাম জাতের আলুর ফল ১০ থেকে ১২ মেট্রিক টন, তবে মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা যে আলু তুলছেন সেখানে আমরা দেখছি হেক্টর প্রতি ১৫মেট্রিক টন পর্যন্ত আলু উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়েও তারা ভালো লাভবান হচ্ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার দিনাজপুর জেলায় ৪৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে আগাম জাতের আলু চাষ হয়েছে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে। এবার হেক্টর প্রতি ফলন হয়েছে ১০ থেকে ১২ মেট্রিক টন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল