প্রত্যন্ত গ্রামের গৃহিণী ববিতা রানী। একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলেছেন নিজেকে। এখন স্থানীয় অনেকেই তার দেখানো পথে হাঁটছেন। দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার তারগাঁও ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামে থাকেন তিনি। সংসারে উন্নতি আনতে কিছু করার চিন্তা করেন। একদিকে অর্থ সংকট অন্যদিকে ব্যাংক ঋণ পাওয়া কঠিন।
অবশেষে নিজ মনোবল আর সাহস নিয়ে ববিতা রানী চার বছর আগে শুরু করেন কেঁচো সার উৎপাদন। এখন একটি রিং থেকে ১০০টি রিংয়ে চলছে তার কেঁচো কম্পোস্ট সার তৈরি। বিভিন্ন খামার থেকে গোবর সার এনে তা রিংয়ে ভর্তি করেন। এভাবেই কেঁচো দিয়ে তৈরি করেন সার। এই সার উৎপাদন করতে খরচ হয় ১৫ হাজার টাকা। মাসে তিন টন সার উৎপাদন করছেন তিনি।
ববিতা রানী তার স্বামী, ছেলে ও বউমা মিলে এ কাজ করছেন। সব খরচ বাদ দিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট সার বিক্রি করে গড়ে প্রতি মাসে তার ৩০ হাজার টাকা লাভ থাকে। দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাহারোল উপজেলা ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে তাকে সহযোগিতা প্রদান করে কৃষি অধিদপ্তর। ব্যবসা করতে হলে পুরুষের চেয়ে নারীদের সাহসী হতে হবে বলে মনে করেন ববিতা রানী।
ববিতা রানী বলেন, ‘প্রথমে যখন শুরু করি মানুষ আমাকে অনেক কিছু বলেছিল। কেঁচো নিয়ে কাজ করি বলে অনেকে বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি। তবে আমার সাফল্য দেখে এখন এলাকায় প্রায় ১০ থেকে ১২টি পরিবার এই কেঁচো কম্পোস্ট সার তৈরি করছে। অন্য উপজেলাতেও এই সার নিয়ে যাচ্ছে কৃষকরা।’ কাহারোলের সুন্দরপুর গ্রামের কৃষক ললিত চন্দ্র রায় ভুট্টা খেতে এই সার ব্যবহার করেছেন। অন্য সারের তুলনায় এই সারের গুণগত মানও ভালো। কৃষি বিভাগ থেকে সার্বিক সহযোগিতা পেলে ববিতা রানীর এ প্রতিষ্ঠান আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
কাহারোল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মল্লিকা রানী সেহানবীশ জানান, কৃষি বিভাগ ববিতা রানীকে সব প্রকার সহযোগিতা করছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই