অষ্টম বেতন কাঠামোতে বৈষম্যের প্রতিবাদে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী তিনদিনের কর্মবিরতি পালন করছেন দেশের সব সরকারি কলেজের শিক্ষকরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষকরা তিন দিনের কর্মবিরতি শুরু করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার দ্বিতীয় দিনেও কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। এর ফলে অচল হয়ে পড়েছে দেশের সব সরকারি কলেজ। তিন দিনের কর্মবিরতি বৃহস্পতিবার শেষ হবে। এরপরও দাবি পূরণ না হলে লাগাতার কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা।
সব সরকারি কলেজে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মবিরতি পালন করেছেন শিক্ষকরা। দেশের কোন কলেজেই একাডেমিক, প্রশাসনিক কার্যক্রম ও পরীক্ষা হয়নি। রাজধানীর ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, তিতুমীর কলেজ, বাঙলা কলেজ ঘুরে শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলতে দেখা গেছে। দেশের ৩১০টি সরকারি কলেজেও একই অবস্থা। এতে কলেজ পর্যায়ে অনার্স-মাস্টার্স পাঠদানে ভয়াবহ সেশন জটের আশংকা করছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, অবিলম্বে শিক্ষকদের দাবি আমলে নিয়ে সমস্যা সমাধানে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসা উচিত সরকারের।
এর আগে, গত ২২ জানুয়ারি সমিতির সাধারণ সভায় সব সরকারি কলেজে ২৬ থেকে ২৮ জানুয়ারি পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষকদের দাবি না মানা হলে ৬ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করা হবে।
এরপরও দাবি পূরণ না হলে ১৩ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষাসহ ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত রয়েছে। আর ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যেও দাবি পূরণ না হলে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন করে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করা হবে বলেও ঘোষণা রয়েছে।
এ বিষয়ে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সমিতির মহাসচিব আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার মঙ্গলবার জানান, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সব সরকারি কলেজ শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। তিনদিন কর্মবিরতি চলবে।
অষ্টম বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশের পর অধ্যাপকদের পদমর্যাদা ও বেতনক্রম অবনমনের অভিযোগ এনে সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল বহাল রাখা ছাড়াও শিক্ষকদের পদ আপগ্রেডেশন এবং বৈষম্য নিরসনে ‘সুপারনিউমারারি পদ’ সৃষ্টির মাধ্যমে পদোন্নতির দাবি জানিয়ে আসছেন সরকারি কলেজ শিক্ষকরা।
শিক্ষকরা বলছেন, অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পঞ্চম থেকে সরাসরি তৃতীয় গ্রেডে পদোন্নতি দেওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারের পঞ্চম গ্রেডের সহযোগী অধ্যাপকরা পদোন্নতি পেয়ে চতুর্থ গ্রেডে অধ্যাপক হতেন। চতুর্থ গ্রেডের অধ্যাপকদের অর্ধেক সিলেকশন গ্রেড পেয়ে তৃতীয় গ্রেড পেতেন।
শিক্ষকদের অভিযোগ, নতুন বেতন কাঠামোয় সিলেকশন গ্রেড বাতিলের ফলে অধ্যাপকদের চতুর্থ গ্রেড থেকেই অবসরে যেতে হবে। ফলে মর্যাদা ছাড়াও বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা।
বিডি-প্রতিদিন/২৭ জানুয়ারি, ২০১৬/মাহবুব