শুক্রবার সকালের ঘটনা। কয়েকজন বহিরাগত তরুণ জুতা পায়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) 'সাবাশ বাংলাদেশ' ভাষ্কর্যের বেদীতে ওঠেছিল। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত কয়েকজন সাংবাদিক তাদের ভাস্কর্যের বেদী থেকে নেমে যেতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে উদ্ধত আচরণ করে বলে, 'সাবাশ বাংলাদেশ আমরাই বানিয়েছি, এখানে যা ইচ্ছা তাই করব। এখানে কীভাবে উঠতে হবে সেটা আমরা ভাল জানি।'
এসময় সাংবাদিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা করতে শুরু করে দেয় বহিরাগতরা। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে বহিরাগতদের একজন ‘তুই’ সম্বোধন করে সাংবাদিকদের বলে, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কি তোদের বাপের!’ এসময় বহিরাগতদের আরেকজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে পরিচয় আছে দাবি করে সাংবাদিকদের ‘দেখে নিবো’ বলে হুমকি দেয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন সাংবাদিক বলেন, সকালে ‘সাবাশ বাংলাদেশ’ চত্বরে গিয়ে দেখি কয়েকজন বহিরাগত ভাস্কর্যের বেদীতে জুতাসহ বসে আছে। তাদেরকে বেদী থেকে নামার জন্য অনুরোধ করলে তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা করতে শুরু করে দেয়। তারা মতিহার থানা আওয়ামীলীগ নেতা আলাউদ্দীনের পরিচয় দেয়ে আমাদের ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ওই বহিরাগতদের মধ্যে একজনের নাম মেজবাহ। তিনি রাজশাহী মহানগরের সাধুর মোড় এলাকার বাসিন্দা। অন্য জনের নাম জিসান, সে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর এলাকার বাসিন্দা ও কলেজ শিক্ষার্থী।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। ‘সাবাশ বাংলাদেশ’, শহীদ মিনার, শহীদ ড. জোহার মাজার প্রাঙ্গণ, বধ্যভূমি, নির্মিতব্য শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি ফলকে প্রায়ই অনেককে জুতা পায়ে ওঠতে দেখা যায়। এদের অধিকাংশই বহিরাগত শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় যুবক।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মজিবুল হক আজাদ খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রতিনিধিত্বকরী স্থাপনাগুলোর যেন অবমাননা না হয় সে বিষয়ে রাবি প্রশাসন সব সময় সজাগ। তবে বর্তমান সময়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে রাবি প্রশাসনের সম্পর্ক ভালো না। তাই স্থানীয় বহিরাগতরা এরকম ঝামেলা তৈরির চেষ্টা করছে। আগামী ২০ তারিখ পর্যন্ত তারা এ রকম ঝামেলা করবে বলে আমাদের ধারণা। তারপরও আমরা এগুলো সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি।
বিডি প্রতিদিন/১০ মার্চ, ২০১৭/ফারজানা