পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। শনিবার বেলা ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত দফায় দফায় এই সংঘর্ষ হয়।
পাবনা সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এবনে মিজান জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তুচ্ছ ঘটনায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন ডা. আব্দুল আলীমকে এক কর্মচারীর হাতে লাঞ্ছিত করাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়। বেলা ১১টার দিকে এই বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থী ও এক কর্মচারী লিটনের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। পরে শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর হামলা চালায়। এ সময় নিরাপত্তা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামসহ ৪/৫ জন আহত হয়। পরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংগঠিত হয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করতে গেলে ক্যাম্পাসে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ। দফায় দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮/৯ জন পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা প্রায় ৩০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।
এ বিষয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যালয় কর্মকর্তা কর্মচারী সমিতির সভাপতি শামস সাদ ফকরুল বলেন, শিক্ষকদের উস্কানীতে একদল শিক্ষার্থী এসে আমাদের কর্মকর্তাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় কর্মকর্তা কর্মচারীরা বাধা দিতে গেলে তারা সংগঠিত হয়ে আবারও এসে আমাদের উপর হামলা করে। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এ সময় তারা কর্মকর্তাদের প্রায় ৫০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে বসে সুরহা করার চেষ্টা করছি। তবে আমাদের ১২/১৩ জন আহত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের অনেক সম্পদ নষ্ট করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ৩য় শ্রেণির কর্মচারী হয়ে একজন সম্মানিত শিক্ষকের শরীরে হাত তুলছে, এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছি। শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শিক্ষক লাঞ্ছনার কর্মসূচী পালন করছিলাম। কর্মচারীরা আমাদের উপর হামলা করলে এ খবর পুরো ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পরলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে।
এ বিষয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যালয়ের প্রক্টর আওয়াল কবির জয় বলেন, দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জরুরি একটি বৈঠকের আহ্বান করা হয়েছে। বৈঠকে একটি তদন্ত কমিটি ঘঠন করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে যারা এই ঘটনায় জড়িত রয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। বিচারের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা আজকের জন্যে কর্মসূচী সমাপ্ত করেছে বলেও দাবী করেন প্রক্টর।
বিডি-প্রতিদিন/২৮ অক্টোবর, ২০১৭/মাহবুব