রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নাট্যকর্মীকে বেধড়ক মারধর করেছে ছাত্রলীগের দুইজন নেতা। মঙ্গলবার দুপুরে দলীয় এক নেতাকে মারধরের ঘটনার ৪ ঘণ্টার মাথায় রাত সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মমতাজউদ্দিন কলা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার মো. মঈনুল ইসলামকে আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। সে রাবির ঐতিহ্যবাহী নাট্য সংগঠন অনুশীলন নাট্যদলের একজন সক্রিয় কর্মী।
মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন, রাবি ছাত্রলীগের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও সাংবাদিক হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি মাহমুদুর রহমান কানন এবং কলা অনুষদের যুগ্ম সাধারণ-সম্পাদক ঝলক সরকার।
এদের মধ্যে মাহমুদুর রহমান কানন এর আগে ডেইলি স্টারের রাবি প্রতিনিধি আরাফাত রহমানকে মারধরের দায়ে সংগঠন থেকে স্থায়ী বহিষ্কার হয়েছিলেন। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সম্প্রতি তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে।
ভুক্তভোগী মঈনুল অভিযোগ করেন, মমতাজ উদ্দিন কলাভবনের সামনে তারা বেশ কয়েকজন বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এসময় হঠাৎ ছাত্রলীগ নেতা কানন ও ঝলক এসে তাদেরকে সেখান থেকে সরে যেতে বলে। মইনুলসহ অন্যরা সরে যেতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে বাক-বিতন্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতা কানন ও ঝলকসহ ৫/৬ জন মইনুলকে বেধড়ক মারধর শুরু করে। এতে মঈনুলের মাথা ও চোখে গুরুতর আঘাত পায়। পরে তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থগারের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। সমাবেশে রাবি শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি কিংশুক কিঞ্জল বলেন, ‘কোনো ইস্যু ছাড়াই মঈনুলকে মারধর করেছে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ নেতা। এর আগেও ওই ছাত্রলীগ নেতা সাংবাদিক আরাফাতকে মারধর করেছিল। ওই চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ নেতাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করতে হবে। মঈনুলের শারীরিক অবস্থার অবনতি ও চিকিৎসার জন্য যে টাকার প্রয়োজন তার ব্যয় প্রসাশন ও ছাত্রলীগকে বহন করতে হবে।’
অভিযুক্ত কানন ও ঝলক মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে দাবি করেন, মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। মঈনুলের সঙ্গে তাদের বাকবিতন্ডা হয়েছে।
রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। ক্যাম্পাসের বাইরে থাকায় তাৎক্ষণিক কিছু বলতে পারছি না। ক্যাম্পাসে ফিরে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
রাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘মারধরের বিষয়টি শুনেছি। খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার