সারা বাংলাদেশে যখন মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালিত হচ্ছে ঠিক সেই সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) চলছে মাদকের অবাধ বিচরণ। যেন বাধা দেয়ার কেউ নেই। প্রতিটি আবাসিক হলে মাদক সেবনককারীরা আসর জমাচ্ছে প্রতিনিয়ত। ক্যাম্পাসে মাদক নিয়ে একাধিকবার অভিযোগ আসলেও প্রশাসনের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি। যার ফলে মাদকের গ্রাহক ও ব্যবসায়ীরা আরো উচ্ছৃঙ্খল হয়ে উঠেছে।
দেশে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনার কারণে ক্যাম্পাসে নিরাপদ মাদক বাজার তৈরি করছেন ব্যবসায়ীরা। গত কয়েক মাস ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাধে মাদক সেবন আর ব্যবসায়ীদের বিচরণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকে আবাসিক হলগুলোতে বসে মাদকের আসর। বাতাসে ভেসে বেড়ায় গাঁজার উৎকট গন্ধ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটু সদিচ্ছাতেই এসব বন্ধ হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞমহল।
জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর স্টেশন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শাটল যোগে ক্যাম্পাসের রেল স্টেশনের পাশে রেল কলোনিতে বিভিন্ন ধরণের মাদকদ্রব্য এসে পৌঁছে। সেখান থেকে দফায় দফায় ভাগ হয়ে বিভিন্ন হল, আবাসিক এলাকা, ফরেস্ট্রি এলাকাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তর হয়ে সরাসরি কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংলগ্ন বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নং গেইট হয়েও মাদক পাচার হয় বলে জানা যায়। সেখান থেকে মাদক সেবীরা স্লুইস গেইট, প্যাগোডাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়। এসব জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা নিয়োজিত থাকলেও তারা থাকে নিস্ক্রিয় দর্শক।
জানা যায়, পূর্বের যেকোন সময়ের চেয়ে আবাসিক হলগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে মাদকদ্রব্য সেবন বাড়ছে। নির্দিষ্ট কয়েকটি হলের গন্ডি পেরিয়ে এখন তা ছড়িয়ে পড়ছে সবখানে। এমন পরিস্থিতির জন্যে মাদক সহজলভ্য হওয়া এবং প্রশাসনের উদাসীনতাকে দূষছেন বিশেষজ্ঞমহল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, পড়ালেখার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষকদের কোন তৎপরতা নেই। তারা রাতে বেলা যদি অন্তত একবার করে হলে আসতেন তবে মাদকের উৎপাত কিছুটা কমে আসতো।
বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা প্রশাসনিক পর্যায়ে কয়েকদফা বৈঠক করেছি। অতিসত্তর আমরা মাদক বিরোধী অভিযানে নামব। যদি কোনো শিক্ষার্থীর সাথে মাদকের সামান্যতম সম্পর্কও থাকে তবে তার ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে।’
বিডি-প্রতিদিন/ ই-জাহান