রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তির অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দুই শিক্ষক প্রফেসর ড. রহমান নাসির ও ড. হানিফ মিয়ার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতার করা অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে চবি উপাচার্যসহ অভিযুক্ত শিক্ষকদের চিঠিও দিয়েছে বলে জানা গেছে।
অভিযুক্ত শিক্ষকদ্বয়ের প্রশাসনিক পদে নিয়োগ বাতিলের দাবিতে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর চবি প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশন করেন ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ইফতেখার উদ্দিন আয়াজ। পরে এ বিষয়ে উপাচার্যসহ রাষ্ট্রপতি কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসিতেও লিখিত অভিযোগ দেয় আয়াজ। অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি কার্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
ইউজিসির সদস্য ও তদন্ত কমিটির প্রধান প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ইফতেখার উদ্দিন আয়াজের করা অভিযোগ তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রনালয় কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।
রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ে পাঠানো অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা ইফতেখার উদ্দিন আয়াজ উল্লেখ করেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তির ঘটনায় গ্রেফতার চবি সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মাইদুল ইসলামকে মুক্তির দাবিতে নৃ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রাহমান নাসির উদ্দিন ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. হানিফ মিয়া সভা সমাবেশ আয়োজন করেন। এছাড়া চবি শিক্ষক ড. রাহমান নাসির উদ্দিন বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কটূক্তি করে পোস্ট দেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, সুপ্রীমকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে প্রধানমন্ত্রীর মূর্তি অপসারণের সিদ্ধান্তকে 'বেহায়া ভোটের পলিটিক্স' উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক সমালোচনা, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য সৃষ্টিকে বাহবা দিয়ে ড. রাহমান নাসির ফেসবুকে পোস্ট দেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়েও কটুক্তি ও ব্যঙ্গাত্মকভাবে প্রচারণা চালান ড. রাহমান নাসির উদ্দিন।
অভিযোগে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য পদে ড. শিরীন আখতার দায়িত্ব নেয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটাতে বিএনপি জামায়াতের নীল নকশার বাস্তবায়নকারী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতিকে কটুক্তিকারী এ দুই শিক্ষককে প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত করা হয়। ড. রাহমান নাসির উদ্দিনকে চবি গবেষণা পরিচালনা ও প্রকাশনা দফতরের পরিচালক এবং ড. হানিফ মিয়াকে সহকারী প্রক্টর পদে নিয়োগ দেয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা ইফতেখার উদ্দিন আয়াজ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ড. রাহমান নাসির উদ্দিনকে এবার চবি ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি পদে নিয়োগ দিতে তোড়জোড় শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তার আগে গবেষণা সেলের পরিচালক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক কটুক্তিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের প্রশাসনিক দায়িত্ব প্রদান করা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।
চবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল টিপু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ দুই জন শিক্ষককে যদি কোন প্রশাসনিক দায়িত্বে রাখা হয় ছাত্রলীগ কঠোর আন্দোলনে নামবে। কারণ মহামান্য রাষ্ট্রপতি, জননেত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে অশ্লীলভাবে কটুক্তিকারীদের জায়গা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে হতে পারেনা।
বিডি প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ