বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস। বৃহস্পতিবার দিবসটি উপলক্ষ্যে স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, দোয়া-মাহফিল ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর রাতে জগন্নাথ হলের হলরুম ধসে সংঘটিত মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হয়। দুর্ঘটনায় ২৬জন ছাত্র, ১৪জন অতিথি ও কর্মচারী নিহত হয়েছিলো।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটায় জগন্নাথ হল স্মৃতিসৌধে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের পুষ্পস্তবক অর্পণ ও নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর বিভিন্ন হলের পক্ষে হল সমূহের প্রাধ্যক্ষ, জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, জগন্নাথ হল কর্মকর্তা কর্মচারী কল্যাণ সমিতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ও জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
পরে জগন্নাথ হলের অক্টোবর স্মৃতি ভবন প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপাচার্য বলেন, সেদিন অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যার যার সাধ্যানুযায়ী রক্ত, অর্থ ও শ্রম দিয়ে এই মর্মান্তিক দূর্ঘটনায় হতাহতদের সাহায্যে সকলে এগিয়ে এসেছিল। মানবিক বিপর্যয় প্রতিরোধে এই ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা হলো আমাদের ধর্মীয়, সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধের বহিঃপ্রকাশ। তিনি বলেন, ‘১৫ অক্টোবর’ থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে এবং সকলের নিজ নিজ দায়িত্বের জায়গাটি জাগ্রত রাখতে হবে। এই ধরণের দুঃখজনক ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকে যত্নবান ও সচেতন থাকার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
এসময় আরও বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, শোক দিবস পালন কমিটির আহ্বায়ক ড. দেবপ্রসাদ দাঁ প্রমুখ।
দিবসটি উপলক্ষ্যে নিহতদের আত্নার শান্তি কামনায় জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং বাদ আছর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে মোনাজাত করা হয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল, হোস্টেল ও প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন