করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলে স্বশরীরে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে অনলাইনে পরীক্ষা নিতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ ও ইন্সটিটিউটগুলো। কীভাবে এই পরীক্ষা নেওয়া হবে, সেজন্য বিস্তারিত নীতিমালাও প্রকাশ করেছে প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে, গত ১ জুন অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিষদের বিশেষ সভায় লকডাউন বা করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে স্বশরীরে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হলে ওয়েট ল্যাব বা হার্ডওয়্যার ল্যাব কেন্দ্রীক পরীক্ষা ব্যতীত সকল পরীক্ষা অনলাইনে নিতে বিভাগ ও ইন্সটিটিউটগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
যে প্ল্যাটর্ফমে হবে পরীক্ষা-
বিজ্ঞপ্তিতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পরীক্ষা গ্রহণের জন্য প্রতি সেমিস্টার বা বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘গুগল ক্লাসরুম’ খোলা হবে। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩দিন আগে গুগল ক্লাসরুমে যোগদান করবে। প্রতিটি পরীক্ষার জন্য আলাদা অ্যাসাইনমেন্ট খোলা হবে। অ্যাসাইনমেন্টে নির্ধারিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংযুক্ত থাকবে যা পরীক্ষার ৫ মিনিট পূর্বে গুগল ক্লাসরুমে প্রকাশ করা হবে। পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র ডাউনলোড করে নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে।
পরীক্ষা প্রত্যবেক্ষণের জন্য অনলাইন মিটিং প্লাটফর্ম ‘জুম’ ব্যবহার করা হবে। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট পূর্বেই জুমে জয়েন করতে হবে। এক্ষেত্রে নামের পরিবর্তে শুধু পরীক্ষার রোল নম্বর ব্যবহার করতে হবে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ভিডিও চালু রাখতে হবে।
প্রশ্নপত্র, মানবণ্টন ও সময়-
অনলাইন পরীক্ষার সময় ও নম্বর প্রচলিত সময় ও নম্বরের অর্ধেক হবে। তবে নম্বর ফলাফল তৈরির সময় পূর্ণ নম্বরে রূপান্তরিত করা হবে। তবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা প্রতি ঘণ্টার জন্য অতিরিক্ত ১০ মিনিট সময় বেশি পাবে।
প্রশ্নপদ্ধতির কথা উল্লেখ করে এতে বলা হয়, প্রশ্নপত্র হবে প্রচলিত পদ্ধতির (বর্ণনামূলক, এমসিকিউ ও সংক্ষিপ্ত)। তবে বিভাগের একাডেমিক কমিটি চাইলে তা পরিবর্তন করতে পারবে। তবে পরীক্ষা শুরু এক সপ্তাহ আগেই প্রশ্নপত্রের ধরণ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবহিত করা হবে। এছাড়া প্রচলিত পদ্ধতিতেই প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও মডারেশন করা হবে।
উত্তরপত্র জমা-
পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীরা তাদের উত্তরপত্র স্ক্যান করে বা ছবি তুলে একটি সিঙ্গেল পিডিএফ ফাইলে গুগল ক্লাসরুমের অ্যাসাইনমেন্টে (যেখানে প্রশ্ন দেয়া হবে) ১০ থেকে ৩০ মিনিটের (পূর্বনির্ধারিত সময়) মধ্যে জমা দিবে। উত্তরপত্রের শুরুতে অবশ্যই পরীক্ষা কমিটি কর্তৃক সরবরাহকৃত কাভার পেজ সংযুক্ত করতে হবে। পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে একদিন আগে কাভার পেজের এডিটেবল সফটকপি পরীক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হবে।
পরীক্ষা প্রত্যবেক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সমস্যা-
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরীক্ষার শুরুর দিন পরীক্ষা কমিটির কমপক্ষে একজন সদস্যকে বিভাগ বা ইন্সটিটিউটে সশরীরে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া প্রধান পর্যবেক্ষককেও সশরীরে উপস্থিত থাকবেন। একজন পর্যবেক্ষককে জুমে যুক্ত হয়ে সর্বোচ্চ ২৫ জন পরীক্ষার্থীকে পর্যবেক্ষণ করবেন।
পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বৈদ্যুতিক বা যান্ত্রিক ত্রুটি অথবা ইন্টারনেটের সমস্যার কারণে কোনো পরীক্ষার্থী জুম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে অথবা উত্তরপত্র নির্ধারিত সময়ে আপলোড করতে ব্যর্থ হলে তাকে অনধিক পাঁচ মিনিটের মধ্যে মোবাইল ফোনে প্রত্যবেক্ষককে জানাতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- নীতিমালায় নেই, এমন কোনো সমস্যা উদ্ভব হলে পরীক্ষা কমিটি তার সমাধান দিবে। এছাড়াও সুষ্ঠভাবে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কর্মশালা আয়োজনের কথাও বলা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত