চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপর সংঘর্ষের ঘটনায় ৩০ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাছাড়া আগামী ২৭ নভেম্বর বন্ধ ক্যাম্পাস খোলা হবে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলা কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। এর আগে গত সোমবার রাতে সংঘর্ষের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি অধ্যক্ষ বরাবরে প্রতিবেদন জমা দেয়।
জানা যায়, কলেজে অতীতের মত সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ও ছাত্র হোস্টেলের সকল সিট বরাদ্দ বাতিল করা হয়। তাছাড়া ছাত্রী হোস্টেল খোলার বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অন্যদিকে, বহিস্কৃতদের মধ্যে ৮ জনকে দুই বছরের জন্য, দুই জনকে দেড় বছরের জন্য এবং ২১ জনকে এক বছরের জন্য সকল শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। তাছাড়া অভিযুক্তের তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও সঙ্গত কারণে মাথার হাড় ভেঙ্গে যাওয়া মাহাদি জে আকিব এবং রক্তিম দে ও এনামুল হোসেনের ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শাহেনা আক্তার বলেন, প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকান্ডে যুক্ত থাকায় আট শিক্ষার্থীকে দুই বছরের জন্য, দুইজনকে দেড় বছরের জন্য এবং ২০ জনকে এক বছরের জন্য বহিস্কার করা হয়েছে। এই সময়ে তারা কোনো ধরনের শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে না। তাছাড়া ক্যাম্পাসে সব ধরণের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড অতীতের মতই বন্ধ থাকবে।
জানা যায়, গত ২৯ অক্টোবর চমেকে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আহত হন চমেক ছাত্র মাহফুজ ও নাইমুল। এ সংঘর্ষের জেরে পরদিন সকালে চমেকের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে মাত্র ৫০ সেকেন্ডেই ৮-১০ জন যুবক এমবিবিএস ৬২তম ব্যাচের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাহাদি জে আকিবের ওপর হামলা চালিয়ে থেতলে দেয় তার মাথার খুলি। পরে আকিবের মাথায় জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়। জখম গুরুতর হওয়ায় আকিবের পুরো মাথায় লাগানো হয় সাদা ব্যান্ডেজ। চিকিৎসকরা এতে লিখে দেন ‘হাড় নেই, চাপ দিবেন না।’ এ লেখাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। হৃদয় নাড়া দেয় মর্মস্পর্শী এ লেখাটি। দেশজুড়ে কড়া সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় চমেক পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এ কমিটি গত সোমবার রাতে অধ্যক্ষ বরাবরে প্রতিবেদন জমা দেয়।
বিডি প্রতিদিন/এএম