ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে বিএনপিপন্থী একজন সদস্যের বক্তব্য শেষে দেওয়া ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ স্লোগান কেন্দ্র করে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ওই স্লোগান এক্সপাঞ্জ করেন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে সিনেট অধিবেশনে এই ঘটনা ঘটে।
সূত্র জানায়, বিএনপি-জামায়াতপন্থী সাদা দল থেকে নির্বাচিত সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলে তার বক্তব্য শেষ করেন। পরে অধিবেশনের পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের শিক্ষক ও আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল থেকে নির্বাচিত সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূইয়া। তিনি ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ স্লোগান নিয়ে আপত্তি তোলেন। এ সময় নীল দল থেকে নির্বাচিত সিনেট সদস্যরা তাকে সমর্থন জানান।
অধিবেশনের সভাপতি উপাচার্য এই ইস্যুতে বলেন, তিনি (অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম) এ রকম বলে থাকলে তা সিনেটে গ্রহণ করা হলো না। পরে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল তার বক্তব্যে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, আমাদের একজন সহকর্মী ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ যে স্লোগানটি দিয়েছেন, তা দুঃখের বিষয়। আমরা কোন দেশে বসবাস করি? শহীদদের রক্তে অর্জিত যে বাংলাদেশ, সে বাংলাদেশের সিনেটে বসে এ ধরনের স্লোগান দেওয়া ত্রিশ লক্ষ শহীদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা। উপাচার্য বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করেছেন, কিন্তু এক্সপাঞ্জই যথেষ্ট নয়, স্বাধীন বাংলাদেশে এমন স্লোগান মেনে নেওয়া যায় না।
অধিবেশনের শেষ দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান পুনরায় ওই স্লোগান প্রসঙ্গে বলেন, অধিবেশনে পাকিস্তানি ভাবধারার যে শব্দটি এসেছিল, আমরা তার প্রতিবাদ জানাই।
পরে অধিবেশন শেষে অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, উপাচার্য চাইলে আমার পুরো বক্তব্যই এক্সপাঞ্জ করতে পারেন। কিন্তু আমি যে বক্তব্য দিয়েছি, তার ওপর এখনো প্রতিষ্ঠিত আছি। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। মুক্ত বুদ্ধি চর্চার জায়গা থেকে একজন শিক্ষক হিসেবে আমি ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিয়েছি। এই স্লোগান কোথাও নিষিদ্ধও হয়নি। তাই আমি আমার বক্তব্যও প্রত্যাহার করিনি। ‘জয় বাংলা’কে আওয়ামী লীগের স্লোগান দাবি করে তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগ করি না। তাই আমি এই স্লোগান দিতে বাধ্য না।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল