ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে বিশৃঙ্খলার অন্যতম বড় কারণ শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত আসন না থাকা। এ সমস্যা নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মিতব্য দ্বিতীয় ক্যাম্পাস পূর্বাচলে আরও কয়েকটি হল নির্মাণ করা যেতে পারে বলে সিনেটে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে আলোচনায় অংশ নিয়ে এ প্রস্তাব দেন সিনেট সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সদস্য অধ্যাপক ড. এজেএম শফিউল আলম ভূঁইয়া। এসময় বিশ্ববিদালয়ের সার্বিক উন্নয়নের জন্য আরও কিছু প্রস্তাবনাও তুলে ধরেন টেলিভিশন, ফিল্ম এন্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের এ অধ্যাপক।
সিনেটে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৯২২ কোটি ৪৮ লাখ টাকার বাজেট পাস করা হয়েছে। এতে গবেষণা খাতে ১৫ কোটি পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা মোট বাজেটের এক দশমিক ৬৩ শতাংশ। নিজের বক্তব্যে গবেষণা খাতে এমন বরাদ্দকে ‘সম্মানের নয়’ বলেও মন্তব্য করেন অধ্যাপক ভূঁইয়া। তিনি বলেন, এদিকে আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করা দরকার। কারণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যদি গবেষণা না করেন, তাহলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে কাক্সিক্ষত মানে নিতে পারবো না।
শিক্ষকদের ক্লাস নেওয়া, পরীক্ষা খাতা দেখার বাড়তি বোঝা কমাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমানে প্রচলিত বছরে দুই সেমিস্টারের পরিবর্তে তিন সেমিস্টার চালুর প্রস্তাবও দেন তিনি। ইউরোপ এবং আমেরিকার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, সেখানে চার মাস করে তিন সেমিস্টারে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয়। একজন শিক্ষক সর্বোচ্চ দুই সিমেস্টার ক্লাস নেন, বাকি সময় গবেষণা, লেখালেখি, ফিল্ড-ওয়ার্কে ব্যয় করেন। নর্থ আমেরিকায় খাতা দেখার কাজ টিচার এ্যাসিন্ট্যান্টরা করে গবেষণার সময় বাড়িয়ে দেন।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত এ ডিন বলেন, বলেন, শিক্ষকেরা যাতে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক মানের রির্সাচ সেমিনারে অংশ নিয়ে তাদের প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে পারেন, এর সম্পূর্ণ খরচ বিশ্ববিদ্যালয় বহন করতে পারে। এছাড়াও এমফিল ও পিএইচডি তত্ত্বাবধানের জন্য শিক্ষকদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন তিনি। গবেষণার জন্য ১০০ কোটি টাকার তহবিল তৈরি’র উদ্যোগ জোরদার করার কথাও বলেন এ অধ্যাপক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বৃদ্ধির চেয়ে সরকারের কাছ থেকে তহবিল আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বারোপ করতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার যাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে এর জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখে- সরকারকে এ ব্যাপারে প্রস্তাব দেওয়া যেতে পারে।
আগামী বছর থেকে চার ইউনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত তার সমালোচনা করেন অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভূঁইয়া। তিনি বলেন, এতে কলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক ধরনের বৈষম্যের শিকার হবে। এক্ষেত্রে অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থী দু’টি পরীক্ষা দিতে পারলেও কলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা পারবে একবার।
এছাড়াও শিক্ষকদের পদোন্নতির জন্য পিএইচডি বাধ্যতামূলক-নিয়মটির কার্যকর হওয়ার সময় বর্ধিত করা এবং বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের সুবিধা বৃদ্ধির কথা বলেন অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভূঁইয়া।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন