জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, শিশু রাসেলের হত্যাকারীদের রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসন করাও হত্যার মতো অপরাধ। বুধবার গাজীপুর ক্যাম্পাসের সিনেট হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে শেখ রাসেলের ৫৮ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
মশিউর রহমান বলেন, ১০ বছরের একটি শিশু পুলিশের সেন্ট্রিবক্সে আশ্রয় নিয়েছিল, সেই শিশুকে খুঁজে বাবা-মায়ের লাশ দেখিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। কতটা উন্মত্ত হলে নরপশুরা এমন নির্মম হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠতে পারে।
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের (দায়মুক্তি) মাধ্যমে বিচারের পথ রুদ্ধ করা হলো। সেটি দেখেই বোঝা যায়, হত্যাকাণ্ড কতটা পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। যখন মতাদর্শিক কারণে গণতন্ত্রের নামে সেই হত্যাকারীদের নিয়ে রাজনীতি করা হয়, ভেবে দেখুন আপনি সেই হত্যার অংশ কিনা।
উপাচার্য বলেন, আমরা তো একটা গণতান্ত্রিক সমাজই তৈরি করতে চেয়েছি। মতের ভিন্নতা থাকলে গণতন্ত্রের শক্তি বাড়ে, রাষ্ট্রের শক্তি বাড়ে। আমরা চাই অর্থনৈতিক কর্মসূচি, মতাদর্শ; সেসব জায়গায় ভিন্নতা থাকুক। এই ভিন্নতা একটি সৌন্দর্য তৈরি করে। সেটিই গণতন্ত্রের শক্তি।
উপাচার্য আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু মূলত তার জীবনব্যাপী গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। সে কারণে আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বলি, তাদের ভিন্ন মতের প্রতি শ্রদ্ধা থাকা উচিত। এ সময় তিনি বলেন, ভিন্ন মত আছে বলে যিনি এই জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টি করলেন তাকে তার সহধর্মিনীকে, তার পুত্র, পুত্রবধূ, ১০ বছরের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করার অধিকার আছে?
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধের পর বাংলাদেশ সৃষ্টি হলো। এরপরও আপনাদের মনের মধ্যে সেই রাজাকারের ভূত রয়ে গেছে। এ থেকে অবশ্যই মুক্তি লাভ করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ-বঙ্গবন্ধুর চেতনায় তৈরি করে মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে।
আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুস সালাম হাওলাদার, স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিন কাশেম, স্নাতকপূর্ব শিক্ষা বিষয়ক স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. মো. নাসির উদ্দিন, কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কেন্দ্রের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান শাহীন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামানসহ বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল