দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে অন্যের পরিচয় ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সেজে অবস্থানের ঘটনায় তোলপারের সৃষ্টি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না হয়েও আবাসিক হলে থাকতেন মফিজুর রহমান ওরফে রাফি। বিভিন্ন সংগঠনের সভা-সমাবেশে, মিছিল-মিটিং ও করতেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষকের সঙ্গে তাঁর ছবি দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত বিভিন্ন ক্রীড়া অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। পরে জানা গেল, অন্যের পরিচয়পত্র ব্যবহার করে শিক্ষার্থী সেজে তিনি এসব করে বেড়াতেন। তবে এ ঘটনা তোলপারের পর তার আত্মগোপনে চলে গেছেন অভিযুক্ত মফিজুর রহমান ওরফে রাফি। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. মামুনুর রশিদ জানান।
শিক্ষার্থীরা জানান, দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই ভুয়া শিক্ষার্থীর নাম মফিজুর রহমান ওরফে রাফি। মফিজুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাফিজুর রহমানের পরিচয়পত্র ব্যবহার করতেন। মাফিজুর রহমান ১৯তম ব্যাচের কৃষি অনুষদের সি গ্রুপের শিক্ষার্থী। তাদের দু’জনের নাম প্রায় একই হওয়ায় প্রায় চার বছর ধরে কেউ জানতে পারেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। মাফিজুর রহমান ডরমিটরি-২ আবাসিক হলের শিক্ষার্থী। তবে তার বাড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে হওয়ায় তিনি হলে থাকতেন না। বাড়ি থেকেই ক্যাম্পাসে যাতায়াত করেন। এ সুযোগে তার পরিচয়পত্র দেখিয়ে মফিজুর সেখানে থাকতেন। কৃষি অনুষদে এ বি ও সি এই তিনটি গ্রুপ আছে। 'এ' গ্রুপের শিক্ষার্থীরা জানতেন, মফিজুর 'বি' গ্রুপের ছাত্র। আবার বি গ্রুপের শিক্ষার্থীরা জানতেন মফিজুর 'সি' গ্রুপের ছাত্র। তবে কেউই তাকে ক্লাস করতে দেখেনি। ক্লাস করার কথা বললে মফিজুর বলতেন, ক্লাস করতে তার ভালো লাগে না। তাই ক্লাসে যান না। শুধু পরীক্ষায় অংশ নেন।
কৃষি অনুষদের কয়েক শিক্ষার্থী জানান, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক ব্যাডমিন্টন খেলার আয়োজন করে। ১৯তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী সে খেলায় নিবন্ধন করতে গিয়ে দেখেন মফিজুরও নিবন্ধন করেছেন। কিন্তু তার আইডি নম্বর তার পরিচিত মাফিজুর রহমান এর সঙ্গে মিলে গেছে। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে ওই ছাত্র প্রকৃত শিক্ষার্থী মাফিজুর রহমানকে বিষয়টি জানান। পরে মাফিজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের কাছে গত ১০ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেন।
প্রকৃত শিক্ষার্থী মাফিজুর রহমান জানান, বন্ধুর কাছে জানতে পেরে খোঁজ নিয়ে দেখি মফিজুর রহমান রাফি নামের কোনো শিক্ষার্থী নেই। পরে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. মামুনুর রশিদ জানান, প্রকৃত ঘটনা জানতে তারা কাজ করছেন। তারা অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাননি। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। অভিযুক্ত যদি বহিরাগত হয় তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল