রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, কথাসাহিত্যে নিজস্ব ভুবন সৃষ্টি করেছেন হাসান আজিজুল হক। কেননা সাহিত্যকর্মে তার বাচনভঙ্গি, সংলাপ ও চরিত্র নির্মাণ পাঠককে সর্বদা ভাবিয়ে তুলেছে। তাই দুই বাংলার মানুষের কাছে তিনি সমানভাবে সমাদৃত।
মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে বরেণ্য কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের প্রথম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
উপাচার্য বলেন, বরেণ্য এই কথাসাহিত্যিক আমাদের কাছে আলোর মতো। যার চিন্তা, দর্শন ও সাহিত্যকর্মে আমরা হয়েছি আলোকিত। কেননা তিনি পুরস্কারের জন্য নয়, কেবল মানুষের জন্য লিখতেন। তিনি প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে কথা বলতেন। ষাটের দশকে বাংলা সাহিত্যে যারা অবদান রেখেছেন, এই কথাসাহিত্যিক তাদের মধ্যে অন্যতম। আমরা এই মহান মানুষটিকে চিরকাল স্বরণ করতে চাই। সেজন্য তার প্রয়াণ দিবসকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নথিভুক্ত করা হবে। যাতে প্রতিবছর এই দিনে সবাই শ্রদ্ধাভরে তাকে স্মরণ করতে পারে।
স্মৃতিচারণ করে বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা বলেন, হাসান আজিজুল হক সাহিত্য জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। বরেণ্য এই মানুষের সাহিত্যকর্মের তাৎপর্য বর্ণনা করে শেষ হবে না। তার লেখনিতে নিগৃহীত মানুষের মানবিকতার বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে। এমনকি মনুষ্য সত্যকে তিনি যে পূর্ণতা দিয়েছেন সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ছিলেন উদার ও মানবতাবাদী। তিনি সবসময় সামনেই এগিয়ে চলার চেষ্টা করে গেছেন। শেষ যেন তার কাছে নতুন করে শুরু। বরেণ্য এই কথাসাহিত্যিকের সাহিত্যকর্ম চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবাইদুর রহমান প্রামানিক, আলোচক হিসেবে ছিলেন বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম। জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বরেণ্য শিক্ষক, গবেষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বরে অবস্থিত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এসময় পুষ্পস্তবক অর্পণ ও রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। পরে দর্শন বিভাগসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই