রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অন্য নেতার হলকক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চুরি ও বরাদ্দকৃত কক্ষে থাকতে না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নেতা ছাত্র উপদেষ্টা নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নুর।
ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা সামিউল আলম পিয়াস। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি একই হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলফাত সায়েম জেমস ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়াকে অভিযুক্ত করেন।
অভিযোগের ব্যাপারে ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নুর বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হল কক্ষ থেকে শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র চুরি ও হলে থাকতে না দেয়া সম্পর্কে একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হলের প্রাধ্যক্ষকে জানানো হবে। তারপর এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, গত ৪ মার্চ বঙ্গবন্ধু হলের ২১০ নম্বর কক্ষ থেকে পিয়াসের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট ও বিছানাপত্র বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জেমসেরর নিদের্শে নিয়ে যায় তার অনুসারীরা। পিয়াস সেটা কক্ষে এসে জানতে পারে এবং জেমসকে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে তিনি অবগত নন।
আগে পিয়াস হলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহানুরের সাথে ৩২৯ নং কক্ষে থাকতেন। কিন্তু সোহানুরের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা হলে সেই কক্ষে থাকতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
পিয়াস জানিয়েছেন, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার কাছে বিষয়টি জানালে তিনি তাকে অকথ্যভাষায় গালাগালি করেন এবং হল ছাড়ার নির্দেশ দেন। বিষয়টি হল প্রশাসনকে জানালে পরবর্তীতে ২১০ নং কক্ষ বরাদ্দ পান। কিন্তু এখন তিনি সেই কক্ষেও থাকতে না পারায় আবাসনহীন ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগপত্রে জানানো হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলফাত সায়েম জেমস বলেন, ‘আমি কিছুদিন যাবৎ ঢাকায় অবস্থান করছি। তার জিনিসপত্রের বিষয়ে কিছুই জানি না। তিনি এই ব্যাপারে জানতে চাইলে হল প্রশাসনের নিকট অভিযোগ দেয়ার ব্যাপারে পরামর্শ দেই। অথচ তিনি আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন।’ এই অভিযোগের প্রমাণ দিতে না পারলে পিয়াসের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন জেমস।
ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেছেন, ‘তাকে (পিয়াস) হল থেকে নামিয়ে দেয়ার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। আমার জানা মতে সে হলের আবাসিক শিক্ষার্থী না। সে মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় আমি তাকে হল থেকে চলে যেতে বলি, যাতে তার সংস্পর্শে এসে অন্যরা বিপথে না যায়।’
মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে ভুক্তভোগী নেতা পিয়াস বলেন, ‘আমি ও ছাত্রলীগ সভাপতি উভয়ের ডোপ টেস্ট করানো হোক। তাহলেই কে মাদকাসক্ত সেটা বেরিয়ে আসবে। তাছাড়া ২১০ নং কক্ষে আবাসিকতার সকল কাগজপত্র আমার নিকট আছে।’ খোদ ছাত্রলীগ সভাপতি কিবরিয়ারই হলের আবাসিকতা নেই বলে জানা তিনি।
এই ব্যাপারে হল প্রাধ্যক্ষের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল