জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ডিবেটিং সোসাইটির নির্বাচনের জন্য পছন্দের প্রার্থীকে ভোটার না করায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ নিসতার জাহান কবিরকে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার বিকেল চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বাস ছেড়ে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তে এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত সাইদুল ইসলাম সাঈদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক শিক্ষার্থী এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি। এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
প্রত্যক্ষদশিরা জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির নির্বাচন উপলক্ষে প্রতিটি বিভাগ ও ইনস্টিটিউট থেকে (বিতার্কিক) দুইজন ভোটারের তালিকা চাওয়া হয়। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ মো. নিসতার জাহান কবিরের কাছে ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি তার পছন্দক্রম অনুযায়ী দুইজন ভোটারের তালিকা পাঠাতে বলেন। তবে অধ্যাপক শাহ নিসতার জাহান কবির সেই কথা নাকচ করে দিয়ে যোগ্যতার ভিত্তিতে দুইজনের নাম প্রেরণ করেন।
এরই রেষ ধরে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাস ছাড়ার পূর্ব মুহূর্তে নিসতার জাহান কবিরকে দেখে তার সাথে তর্কে লিপ্ত হন সাঈদ। এক পর্যায়ে আপনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বলেন আমার কাছে প্রমাণ আছে, আপনাকে আমি দেখে দিব বলে হুমকি দেন ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি। এসময় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইব্রাহীম বিন হারুন পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলে তাকেও আপমানিত করেন সাইদুল ইসলাম সাঈদ।
এ বিষয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. শাহ মো. নিসতার জাহান কবির বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি খুব বিরক্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হয়ে সে কেন এই আচরণ করবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি সাইদুল ইসলাম সাঈদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যে শিক্ষক প্রতিনিয়ত শিবির প্রোমোট করে, ডিবেটিং সোসাইটির দুজন ভোটারই শিবিরের এলিগেশনের থাকা সত্ত্বেও সিলেক্ট করে তিনি। চ্যানেল আই এর মত প্লাটফর্মের অনুষ্ঠানে চ্যাম্পিয়ন বিতার্কিকসহ যেখানে প্রকৃত বিতার্কিকদের বঞ্চিত করা হয়। ছাত্রলীগের একজন কর্মী এবং ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি হিসেবে সেটি জানার বা প্রতিবাদ করার অধিকার আশাকরি আছে।
সাঈদ আরও বলেন, সে তো একজন শিক্ষক, 'সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে তার শরণাপন্ন হওয়া এবং জানতে চাওয়া কোনোভাবেই তাকে হুমকি দেওয়ার সামিল নয়।' শাহ নিস্তার জাহান কবির সাহেব প্রতিনিয়ত সরকার এবং আওয়ামী লীগ বিরোধী লেখালেখি করে এবং ক্লাসে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে, স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে কথা বলে, লেকচার দেয়। সকল ডকুমেন্টস আছে। তাই আশাকরি হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনে ভুয়া তথ্য দিয়ে প্রোপাগান্ডা না ছড়ানোর অনুরোধ থাকবে।
জবি ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর সহকারী অধ্যাপক মেফ্তাহুল হাসান বলেন, 'বিষয়টি শাহ নিসতার জাহান কবির স্যারের কাছ থেকে মৌখিকভাবে শুনেছি। স্যার অভিযোগ দিবেন বলেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, একজন অধ্যাপককে এভাবে হুমকির ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল