২৬ মে, ২০২৪ ১৬:০৪

প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে ঢাবি শিক্ষকদের মানববন্ধন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে ঢাবি শিক্ষকদের মানববন্ধন

সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার এবং পূর্বের পেনশন স্কিম চালু রাখার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতি। মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য পূর্বের পেনশন স্কিম চালু রাখা এবং পেশাগত সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রবর্তনের দাবি জানানো হয়। 

রবিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য আরোপিত "প্রত্যয় স্কিম" শিক্ষকদের পারিবারিক সুরক্ষা নষ্ট করছে অভিযোগ করে মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কলম-বই নিয়েই ক্লাসরুমে থাকতে চায়। কিন্তু আরোপিত অন্যায় প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য যে "প্রত্যয় স্কিম" আরোপ করা হয়েছে তা আমাদের পারিবারিক সুরক্ষা নষ্ট করছে। এই প্রত্যয় স্কিমের ফলে মেধাবীরা আর শিক্ষকতা পেশায় আসতে আগ্রহী হবে না। যেখানে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা খাতকে সবচেয়ে বড় ইনভেস্টমেন্ট সেক্টর বলেছেন সেখানেই আজকে সবচেয়ে বেশি কর্তন করা হচ্ছে। শিক্ষা খাতকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। আমরা চাই, স্মার্ট বিশ্ববিদ্যালয় ও স্মার্ট দেশ গড়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সুরক্ষা বলয় নিশ্চিত করতে হবে। এই প্রত্যয় স্কিম বাতিল করতে হবে। 

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, বঙ্গবন্ধু ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসন দিয়েছিলেন। তিনি শিক্ষাখাতে বিনিয়োগকে সর্বশ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ বলে মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি বাজেটে শিক্ষাখাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে না। শিক্ষাখাতের বাজেটকে কাটছাঁট করা হচ্ছে। তাই শিক্ষকরা আজ পাঠদান ছেড়ে রাস্তায় আন্দোলনে নেমেছেন।

দাবি পূরণ না হলে করণীয় নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দাবি পূরণ না হলে আগামী ২৮ মে সারা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা একযোগে সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করবেন। এসময়ের মধ্যে দাবি না মানা হলে আগামী ৪ জুন সারা দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালসমূহের শিক্ষকরা এক যোগে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন। আমরা আমাদের ওপর আরোপিত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপনের প্রত্যাহার চাই। অন্যথায় শিক্ষকরা বৃহত্তম আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।

শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুর রহীম বলেন, সর্বজনীন পেনশন ঘোষণার প্রথম দিকে যে চারটি পেনশন স্কিম ঘোষণা করা হয়েছিল সেখানে "প্রত্যয় স্কিম" ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা যেখানে একটি পেনশন স্কিমের মধ্যে রয়েছে সেখানে নতুন করে একটি পেনশন স্কিম চালু করা হল। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রীর সুন্দর পদক্ষেপকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র হিসেবে এই "প্রত্যয় স্কিম" চালু করা হতে পারে বলে আমরা মনে করছি। তাই, আমরা প্রধানমন্ত্রীকে এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানাই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড নিজামুল হক ভূঁইয়ার এই মানববন্ধনের সভাপতিত্ব করেন। মানববন্ধনে সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির কার্যকরী পরিষদের সদস্য অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এম ওহিদুজ্জামান, টেলিভিশন ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভূঁইয়া, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোস্তফা কাউসার, শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুন, শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. মিজানুর রহমান, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী প্রমুখ।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর