দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দিবাগত সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে এ অভিযান।
এর আগে মঙ্গলবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সাইফুর রহমানের সঙ্গে শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আবাসিক হল খোলার বিষয়ে একটি বৈঠক হয়।
বৈঠকের একপর্যায়ে হল খোলার আগে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে কথা উঠলে সবার মতামতের ভিত্তিতে আবাসিক হলগুলোতে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। এরপর রেজিস্ট্রারের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত হাবিপ্রবির তাজউদ্দীন আহমদ আবাসিক হলে এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় তাজউদ্দীন আহমদ হলের একটি ফ্লোরের কয়েকটি রুম থেকে ছয়টি সামুরাই, ১৪৩টি বাঁশের লাঠি, ১৬টি রড, ২২টি লোহার পাইপ, দুটি লোহার চেইন, তিনটি খালি মদের বোতলসহ মাদক সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
সরকারের পতনের আগে তাজউদ্দীন আহমদ হলে সার্বক্ষণিক অবস্থান করতেন হাবিপ্রবি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। অভিযান শেষে উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকদের সহায়তায় সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অভিযান চলমান থাকবে বলে জানায় হাবিপ্রবি প্রশাসন।
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলগুলোতে তল্লাশি চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শিক্ষার্থীরা। ছাত্রলীগের দখল করা কক্ষ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। প্রাধ্যক্ষরা বলছেন, ছাত্রলীগের দখল করা কক্ষগুলো থেকে এসব অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কক্ষগুলো দখলে রাখত তারা। প্রায়শই ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে হলে সিট দখল ও মারধরের অভিযোগ উঠত। তবে নেতাদের একচ্ছত্র দাপটে হল প্রশাসন অনেকটা নিরুপায় ছিল। চিহ্নিত সব কক্ষে নতুন আবাসিক শিক্ষার্থী তোলা হবে এবং সংশ্লিষ্ট নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, গত দুই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা, শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শাহ মখদুম ও মতিহার হলে তল্লাশি চালায় হল প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সঙ্গে শিক্ষার্থীরাও ছিলেন। শিক্ষার্থীদের তথ্যের ভিত্তিতে হলের চিহ্নিত কক্ষে তল্লাশি চালানো হয়। এতে বেরিয়ে আসে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, মদের বোতল ও পেট্রলবোমা। চার হলে রামদা, ছুরি, রড, পাইপ ও লাঠিসহ শতাধিক অস্ত্র উদ্ধার হয়। শিক্ষার্থী এগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, অস্ত্রের মজুত থাকা সব কক্ষে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী থাকতেন। বিভিন্ন সময় সাধারণ ছাত্রদের এসব কক্ষে তুলে নিয়ে মারধর ও ভয়ভীতি দেখাত নেতারা। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হতো না। হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেবল সান্ত্বনার বাণী শোনাত। কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ ছিল না। ফলে দিনের পর দিন শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করা হতো।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ