কোথাও কোন বাধা নেই। গাছে গাছে পাখা মেলে মুক্তির জয়গান গেয়ে চলেছে। খানিকটা দূরে মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়ছে তারা। বিচিত্র ও মনোমুগ্ধকর তাদের গায়ের রঙ। আবার, এসব হরেক রকমের প্রজাপতির চঞ্চল উড়াউড়ি দেখতে ভিড় জমিয়েছে হাজারো মানুষ।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত প্রজাপতি মেলার ১৪তম আসরে দেখা মিলেছে এমন চিত্র। ‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’- স্লোগানকে ধারণ করে প্রকৃতি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের 'কীটতত্ত্ব' শাখার উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তন চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় এ মেলা।
মিলনায়তনের পাশেই উদ্ভিদ উদ্যানসহ প্রায় ৩৫ প্রজাতির প্রজাপতি প্রদর্শিত হয়। এর মধ্যে স্ট্রাইপড পিয়েরট, চেস্টনাট অ্যাঙ্গেল, ব্লু টাইগার, কমন স্নো ফ্ল্যাট, গ্রাস ডেমন অন্যতম।
এদিন,মেলাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাস সাজানো হয়েছিল বর্ণিল সাজে। ক্যাম্পাসের ছবি চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে প্রজাপতির ছবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন, পোস্টার ঝুলানো হয়। ছুটির দিন হওয়ায় মৃদু শীতকে উপেক্ষা করে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো প্রজাপতিপ্রেমী মেলায় ছুটে আসেন।
তরুণ-তরুণীদের পাশাপাশি মেলায় শিশু-কিশোরদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তাদের জন্য প্রজাপতি বিষয়ক ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, রচনা প্রতিযোগিতা, প্রজাপতির আদলের ঘুড়ি উড়ানো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এছাড়া, প্রজাপতি বিষয়ক বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে এবং প্রজাপতি পার্কে জীবন্ত প্রজাপতি দর্শনের ব্যবস্থা রাখা হয়।
সাভার থেকে আসা পাঁচ বছর বয়সী দর্শনার্থী ফাইয়াদ আহমেদ আদিত্য বলেন, ‘এর আগে আমি কখনো একসাথে এত প্রজাপতি দেখিনি। আজকে লাল, নীল, বেগুনি আর হলুদ রঙের প্রজাপতি দেখেছি। এগুলো দেখতে খুব সুন্দর, আমরা খুব ভালো লেগেছে।’
এদিকে, এবারের মেলায় বন্যপ্রাণী ও প্রজাপতি সংরক্ষণে অবদানের জন্য বন ও প্রকৃতি বিষয়ক সংগঠন ‘প্লানটেশন ফর নেচারের’ প্রতিষ্ঠাতা সবুজ চাকমাকে বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড, এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাব্বির আহমেদকে বাটারফ্লাই ইয়াং ইনথুজিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
মেলার টাইটেল স্পন্সর হিসেবে ছিল ‘কিউট’। এছাড়া, সহযোগী সংগঠন হিসেবে ছিল প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন), আরণ্যক ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ বন বিভাগ প্রভৃতি।
বিডি প্রতিদিন/আশিক