গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) ‘গৃহাঙ্গনে অ্যাজোলা চাষ প্রযুক্তি এবং এর বহুমুখী ব্যবহার’ শীর্ষক কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিরাঙ্গন কার্যক্রমের আয়োজনে এবং পরিচালক (বহিরাঙ্গন কার্যক্রম) প্রফেসর ড. ফারহানা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণটি আজ মঙ্গলবার সকালে ইন্টারন্যাশনাল কমপ্লেক্সের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
দ্রুত বর্ধনশীল এবং প্রাকৃতিক নাইট্রোজেন সার হিসেবে ব্যবহার উপযোগী জলজ ফার্ন জাতীয় উদ্ভিদ অ্যাজোলার সার পশু খাদ্য, মৎস্যখাদ্য, পানি সংরক্ষণে সহায়ক, পরিবেশ বান্ধব, সাশ্রয়ীসহ এর নানা উপকারী দিক তুলে ধরে বলা হয়— গ্রামীণ উন্নয়ন এবং টেকসই কৃষি এ প্রশিক্ষণের প্রধান উদ্দেশ্য।
প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন গাকৃবির উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. সফিউল ইসলাম আফ্রাদ।
এ সময় অন্যান্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভেটেরিনারি মেডিসিন অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্স অনুষদ এবং গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ অনুষদের ডিনদ্বয়, গৃহাঙ্গনে অ্যাজোলা চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের গবেষণা দলের প্রধান প্রফেসর ড. মো. আমজাদ হোসেনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকোয়াকালচার বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।
গাজীপুরের কাউলতিয়া, টোক, চান্দনা চৌরাস্তা এবং ভূরুলিয়া থেকে আগত ৪০ জন কৃষক-কৃষাণী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে অ্যাজোলা চাষের পদ্ধতি, পুষ্টিগুণ এবং ব্যবহারিক উপকারিতা নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও উপস্থাপন করা হয়। ভিডিওটি প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে অ্যাজোলা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা তৈরি এবং আগ্রহ উদ্দীপনার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ‘বর্তমান কৃষি ব্যবস্থায় টেকসই ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার সময়ের দাবি। সেক্ষেত্রে অ্যাজোলা কৃষকদের জন্য সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলে দিচ্ছে। এটি শুধু জৈব সার হিসেবেই নয়, পশুখাদ্য এবং জল সংরক্ষণে কার্যকর একটি প্রাকৃতিক সমাধান।’
উপাচার্য আরও বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে কৃষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। আগামীর টেকসই কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অ্যাজোলার মতো বিকল্প প্রযুক্তি ও প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার আমাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
প্রশিক্ষণে অ্যাকোয়াকালচার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মৌসুমী দাশ অ্যাজোলা চাষের পদ্ধতি ও ব্যবস্থাপনা, প্রফেসর ড. মো. আমজাদ হোসেন এর ব্যবহারিক দিক ও সম্ভাবনা নিয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। প্রশিক্ষণের শেষ পর্বে সহকারী অধ্যাপক ড. মো. রবিউল ইসলাম অ্যাজোলার পরিচিতি, পুষ্টিগুণ এবং জৈব সার হিসেবে এর ভূমিকা ও উপকারিতা সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেন। বহিরাঙ্গন কার্যক্রমের সহযোগী পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মামুনুর রহমান প্রশিক্ষণটি সঞ্চালনা করেন।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ