টানা ৯৬ ঘণ্টার কবলে পড়েছেন সিলেটের মানুষ। সিএনজি অটোরিকশা ও পাথর সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের পৃথকভাবে ডাকা টানা ৪ দিনের এ ধর্মঘট কর্মসূচিতে বিপাকে পড়েছেন সিলেটের সর্বস্তরের মানুষ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
আজ সোমবার ভোর ৬টা থেকে সিলেট জেলায় চলছে না সিএনজিচালিত অটোরিকশা। সিলেট জেলা সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি. নং-চট্ট-৭০৭ ও সিলেট জেলা অটোরিকশা/অটোটেম্পু শ্রমিক জোট রেজি. নং-চট্ট-২০৯৭-এর সমন্বয়ে গঠিত ঐক্য পরিষদের ডাকে ৪৮ ঘণ্টার এ ধর্মঘট পালন করছেন শ্রমিকরা। সকাল থেকে নগরীসহ সিলেট জেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও পয়েন্টে পিকেটিং করছেন আন্দোলনকারী শ্রমিকরা। ফলে পুরো জেলায়ই চলছে না সিএনজি অটোরিকশা।
গ্রিল সংযোজনের সিদ্ধান্ত বাতিল ও ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোবাইক, মোটরবাইক, মিশুক ও প্রাইভেট গাড়ি দ্বারা যাত্রী পরিবহন বন্ধসহ ৫ দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
অপরদিকে, সিলেটের সকল পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার দাবিতে ইতিপূর্বে ৪৮ ঘণ্টার পণ্য পরিবহন ধর্মঘট কর্মসূচি পালনের পর কোনো সুরাহা না হওয়ায় আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ‘বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’।
সংগঠনটি ২২, ২৩ ও ২৪ ডিসেম্বর পুরো সিলেট বিভাগে এ ধর্মঘট কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানালেও ইতোমধ্যে সুনামগঞ্জ জেলায় এটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে বিভাগের সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে আগামী ৩ তিনদিন এ ধর্মঘট পালিত হবে।
এদিকে, আজ থেকে শুরু হওয়া টানা ৯৬ ঘণ্টার এ পরিবহন ধর্মঘটে চরম বিপাকে পড়েছেন সিলেটের সর্বস্তরের মানুষ। ধর্মঘটের ফলে শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, শ্রমজীবী ও ব্যবসায়ীসহ সকল স্তরের মানুষে সময়মতো কর্মস্থলে যেতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নগরীরসহ সিলেটের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, চন্ডিপুল, জিতু মিয়ার পয়েন্ট, তালতলা, বন্দরবাজার, আম্বরখানা, মদিনা মার্কেট, টিলাগড়, উপশহর ও হুমায়ুন চত্বরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট এবং সড়কে অন্যান্য দিনের মতো নেই সিএনজি অটোরিকশা। তাই বাধ্য হয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় এবং পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে যাচ্ছেন বা কর্মস্থল থেকে ফিরছেন লোকজন। বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নারী ও শিশুরা। সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, সিএনজি অটোরিকশা না চলায় বাস ও লেগুনায় যাত্রীদের গাদাগাদি অবস্থা। এতে কষ্টকর অবস্থায় পড়েছেন নারী ও শিশুরা।
অপরদিকে, সিএনজি অটোরিকশা না থাকার সুযোগে রিকশা চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করছেন অতিরিক্ত ভাড়া। তাই নগরীতে স্বল্প দূরত্বের জায়গা অনেকেই যাতায়াত করছেন পায়ে হেঁটে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত