চলছে শুকনো মৌসুম। কমছে হাওর-বাওর, নদী-নালা, খাল-বিল ও জলাশয়ের পানি। এ সময়টাতে জমে থাকা পানিই শেষ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠে মৎস্যকূলের। এই সুযোগে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার হাওর, খাল-বিল ও জলাশয় শুকিয়ে নির্বিচারে মাছ নিধন করা হচ্ছে। মৎস্য সংরক্ষণ আইনে পানি শুকিয়ে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। বছর বছর এভাবে মাছ নিধন করা হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি কেউ। ফলে ব্যাহত হচ্ছে মাছের স্বাভাবিক প্রজনন। মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ছে জলজ জীববৈচিত্র। বংশ বিস্তার করতে না পারায় বিলুপ্ত হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির শতাধিক সু-স্বাদু মাছ।
সম্প্রতি উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন হাওর-বিল, জলাশয়, খাল ও নিচু জমি পাম্পের সাহায্যে শুকিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। ধরা হচ্ছে কাদায় লুকিয়ে থাকা মাছও। নষ্ট হচ্ছে কৈ, মাগুর, শিং, ফলি, পুঁটি, টেংরা, বোয়াল, চিতল, শোল, মেনি, মলা, কাকিলা, রাণীসহ দেশীয় প্রজাতির ছোট-বড় মা মাছ ও ডিম। এতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে মাছের প্রজনন ও উৎপাদনে। মা মাছ নিধনের ফলে ভবিষ্যতে জলাশয়গুলো মাছ শূন্য হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দীর্ঘ সময় পানিশূন্য থাকায় মরছে অন্যান্য জলজপ্রাণীও। মাছ শিকারে আধুনিক ঔষধ ব্যবহারও করতে দেখা যায় অনেককে।
‘পানি শুকিয়ে মাছ ধরা যাবে না’ মর্মে শর্ত দেয়া থাকলেও তা লঙ্ঘন করে উপজেলার সব’চে বড় জলমহাল চাউলধনী হাওরের পানি শুকিয়ে মাছ আহরণ করছেন লিজ গৃহীতারা। তিন ফুট পর্যন্ত পানি রেখে মাছ ধরার বিধান থাকলেও এর তোয়াক্কা করছেন না তারা।
মৎস্য কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, জলাশয় শুকিয়ে শিকার করলে, মাছ থাকবে না দেশে। প্রজননের স্বার্থে মা-মাছগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে।
এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্ণালী পাল ‘বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জলমহাল শুকিয়ে মৎস্য আহরণ আইনত দণ্ডনীয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন