২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৫:২১

সিলেটে ব্যাংকের এটিএম লুটে গ্রেফতারকৃতরা ৫ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটে ব্যাংকের এটিএম লুটে গ্রেফতারকৃতরা ৫ দিনের রিমান্ডে

সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার শেরপুরে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি)-এর এটিএম বুথ লুটের ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। 

আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে তাদেরকে সিলেটের সিনিয়র চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে রিমান্ড চায় পুলিশ। তারা ৭ দিনের রিমান্ড চাইলেও আদালতের বিচারক মো. মাহবুবুর রহমান শুনানি শেষে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত শামীম আহমেদ, সাফি উদ্দিন জাহির, নুর মোহাম্মদ সেবুল ও আব্দুল হালিমকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফর রহমান রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাত ৩টার দিকে ওসমানীনগর উপজেলার শেরপুর নতুন বাজারস্থ ইউনুছ ম্যানশনের নিচতলায় থাকায় ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের এটিএমে হানা দেয় চার অস্ত্রধারী। তারা বুথের নিরাপত্তা প্রহরীকে জিম্মি করে বেঁধে ফেলে। পরে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে তারা বুথে থাকা মেশিন ভেঙে ২৪ লাখ সাড়ে ৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। 

এ ঘটনায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওসমানীনগর থানায় অজ্ঞাত ৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার তদন্তে সিলেট জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে। ছায়া তদন্ত শুরু করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার একটি দলও।

গতকাল বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ডিবি উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, এটিএম ব্যাংক লুটের ঘটনায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে শামীম আহমেদ, নুর মোহাম্মদ সেবুল ও আব্দুল হালিমকে। তাদের কাছ থেকে ১০ লাখ ৮ হাজার টাকা, দুইটি মোবাইল ফোন, একটি ছুরি, একটি প্লায়ার্স ও মাথায় ব্যবহারের তিনটি কাপড়ের টুকরো জব্দ করা হয়েছে।

ব্যাংকের এটিএম লুটের ঘটনার বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে বক্তব্য দেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন। 

সংবাদ সম্মেলনে সিলেট জেলা পুলিশ জানায়, পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ (উত্তর) সাইফুল আলম ও অফিসার ইনচার্জ (দক্ষিণ) ইকতিয়ার উদ্দিনের সমন্বয়ে একটি বিশেষ টিম সিলেটের বিভিন্ন স্থানে অভিযানে নামে। ২০ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর টানা তিনদিন হবিগঞ্জ শহরের একাধিক স্থানে অভিযান চালানো হয়। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে হবিগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন পাঁচপাড়িয়া গ্রাম থেকে সাফি উদ্দিন জাহিরকে গ্রেফতার করা হয়। জাহির পাঁচপাড়িয়া গ্রামের মমতাজ উদ্দিন মাস্টারের ছেলে। তার দেওয়া তথ্য অনুসারে ঘটনায় ব্যবহৃত একটি পালসার মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। এছাড়া ঘটনাস্থলের পাশ থেকে বুথের মেশিন ভাঙার শাবল উদ্ধার করে জব্দ করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ডিএমপি ডিবি কর্তৃক গ্রেফতারকৃত শামীম আহমেদ ও সিলেট জেলা ডিবি কর্তৃক গ্রেফতারকৃত সাফি উদ্দিন জাহির দীর্ঘদিন দুবাইয়ে থাকা অবস্থায় তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে ওঠে। একসময় দুজনই দেশে ফিরে চুরি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে যায়। শেরপুরে এটিএম বুথ লুটের ঘটনাটিও শামীম ও জাহিরের পরিকল্পনাতেই বাস্তবায়িত হয়। গ্রেফতারকৃত শামীম এক সময় ওমানে থাকা অবস্থায় সেখানকার স্থানীয় ব্যাংকের এটিএম বুথ ডাকাতির ঘটনায় ৮ বছর কারাবাস করে। শেরপুরের ঘটনার পরেও সে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে শামীমের বাসা তল্লাশি করে ঘটনায় ব্যবহৃত তার পালসার মোটরসাইকেল এবং পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর