চট্টগ্রাম মহানগরের জামাল খান এলাকায় প্রকাশ্যে দিন-দুপুরে ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্র আদনান ইসফাত (১৫) খুনের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তিনটি সংস্থা- পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), নগর গোয়েন্দা পুলিশ এবং চকবাজার ও কোতোয়ালী থানার পুলিশ ঘাতকদের গ্রেফতারে একযোগে কাজ করছে বলে জানা যায়। তবে এ ঘটনায় আজ বুধবার রাত আটটা পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি এবং কাউকে আটকও করা হয়নি। তাছাড়া ময়নাদতন্ত শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে বলে জানা যায়।
সিএমপির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র আদনান হত্যায় নেতৃত্ব দিয়েছে মাঈন উদ্দিন নামে এক কলেজ ছাত্র। সে নগরীর সরকারি স্কুলগুলোতে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছে। পুলিশ তাকে খুঁজছে। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহের পর তা যাচাই করে চিহ্নিত করেছে পুলিশ।’
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল হুদা বলেন, ‘আদনান খুনের ঘটনার পর পরই ওই স্থানের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। এরপর ফুটেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা হচ্ছে। সেখানে দেখা যায়- আদনানের মূল ঘাতক মাঈনুদ্দিন। তার সহযোগী ছিল আরো কয়েকজন। ঘাতক যে মাঈনুদ্দিন এটি এখন আমরা নিশ্চিত। তাকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), নগর গোয়েন্দা পুলিশ, চকবাজার ও কোতোয়ালী থানা একযোগে কাজ করছে। আশা করি খুব শিগগরই ঘাতকদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।’
কোতোয়ালি জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনও মামলা দায়ের হয়নি। আদনানের স্বজনরা দাফনে ব্যস্ত থাকায় মামলা দায়ের করা সম্ভব হয়নি। তারা দাফন শেষে মামলা দায়ের করবেন। এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।’
স্কুলের অভিভাবকদের অভিযোগ, কলেজিয়েট স্কুল, চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি মুসলিম হাই স্কুল, নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বর্তমানে ছাত্রলীগের একাধিক গ্রুপ-উপগ্রুপ রয়েছে। এসব গ্রুপে নামে বেনামে অনেক অছাত্র, চাঁদাবাজরা নেতৃত্ব দিয়ে আসছে।
কলেজিয়েট স্কুলের এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘গত তিন মাস ধরে আমার ছেলে বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। তাই তাকে তিনমাস ধরে বাসায় বন্দী করে রাখছি। স্কুলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে যারা ছাত্ররাজনীতির নামে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে, খুনোখুনিতে প্রশ্রয় দিচ্ছে তাদের কাজেরই খেসারত দিচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এর মাধ্যমে স্কুলের শিক্ষা ব্যবস্থাও মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।’
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার দুপুরে জামালখান এলাকায় ক্রিকেট খেলায় সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে দিনে-দুপুরে ধাওয়া করে কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র আদনানের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনা কিশোর খুনের এ ঘটনা চট্টগ্রামে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার