চট্টগ্রামে ভূমিক্ষয়, পাহাড় রক্ষা ও ধসের ঝুঁকি কমাতে বিন্না ঘাস প্রকল্প ‘ভেটিভার সেন্টার’ এর উদ্বোধন করেছেন থাই রাজকুমারী মাহা চাকরি সিরিনধর্ন। ‘বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড ভেটিভার গ্রাস ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ এর আওতায় চট্টগ্রামে এটি উদ্বোধন করা হয়। বুধবার বেলা ১১টায় নগরের টাইগার পাসের বাটালি হিল মিঠা পাহাড়ের পাদদেশে এই ভেটিভার সেন্টারে থাই রাজকুমারী পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের হাতে বিন্না ঘাসের চারা তুলে দিয়ে এ সেন্টারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এ সময় তিনি ভেটিভার সেন্টারে একটি গাছের চারা রোপণ করে প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন চাই পাত্তানা ফাউন্ডেশনের সুমেট তান্তিভেজকুল, প্রকল্পের কারিগরি সহায়তায় থাকা বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম প্রমুখ।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব এ দেশের মানুষকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। ভারি বর্ষণের কারণে ভূমি ধস হচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণ এর প্রভাব ভোগ করছে। পাহাড় ধস রোধে বিন্না ঘাস লাগানোর এই প্রকল্পে সহায়তা করায় থাই রাজকুমারীকে ধন্যবাদ। থাইল্যান্ডের রয়্যাল চাই পাত্তানা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে চসিক এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় এই প্রকল্পে কাজ করবে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ প্রকল্পের জন্য দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে।’
চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহর পাহাড় ঘেরা। প্রায় প্রতিবছরই নগরীর বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটছে। ২০০৭ সালে পাহাড় ধসে চট্টগ্রামে ১২৮ জনের প্রাণহানি হয়। তাই আমরা চাই পাহাড় রক্ষা করতে, আমাদের মানুষের জীবন বাঁচাতে। সেই লক্ষ্যেই পাহাড় ক্ষয় রোধে বিন্না ঘাস লাগানোর এই প্রকল্প আমরা গ্রহণ করেছি।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত পানপিমন সুবান্নাপংসে বলেন, ‘ভারি বর্ষণে পাহাড় ধস রোধে থাই দূতাবাসের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পে অংশগ্রহণের জন্য চাই পাত্তানা ফাউন্ডেশনকে অনুরোধ জানানো হয়। চট্টগ্রামের মানুষের উপকারের জন্য সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন ও প্রশিক্ষণে আমরা কাজ করব।’
প্রকল্পের উদ্ভাবক অধ্যাপক শরীফুল বলেন, ‘বাংলাদেশে যা বিন্না ঘাস, বিদেশে এর নাম ভেটিভার। বিশ্বের শতাধিক দেশে নদী তীর ও বাঁধ রক্ষা এবং পাহাড়ে ভূমিক্ষয় ঠেকাতে এ ঘাস ব্যবহার করা হচ্ছে। চার থেকে ছয় মাসেই এ ঘাসের শেকড় মাটির ছয় থেকে দশ ফুট গভীরে ছড়িয়ে পড়ে। এর শেকড়ের সহন শক্তি ইস্পাতের ছয় ভাগের এক ভাগ। প্রতিকূল পরিবেশে সহজেই মানিয়ে নেওয়ার এবং টিকে থাকার ক্ষমতা আছে এই ঘাসের।’
ভেটিভার প্রকল্পের পরিচালক চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব দাশ বলেন, ‘টাইগার পাসের ভেটিভার সেন্টারে পাইলট প্রকল্পের আওতায় বিন্না ঘাস লাগানো হবে। এরপর চাই পাত্তানা ফাউন্ডেশনের সহায়তায় নগরীর ক্ষয়প্রবণ পাহাড়গুলোতে এস ঘাস লাগানো হবে।’
বিডি প্রতিদিন/৩০ মে ২০১৮/হিমেল