চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচন পরবর্তী বিএনপির প্রার্থী আবু সফিয়ানের পক্ষে জোরালো অবস্থানে রয়েছেন চট্টগ্রাম বিএনপির শীর্ষ নেতারা। তারা এই নির্বাচনে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব-নিকাশ শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে গত ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনটিকে বাতিল করে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়ে একাধিক সংবাদ সম্মেলনও করেছে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি।
ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের ত্রুটি-বিচ্যুতি ও জালিয়াতির তথ্যও উত্থাপন করেছে বিএনপি। নির্বাচনের দিনই দুপুরে নির্বাচন কমিশনার বরাবরে দেয়া লিখিত অভিযোগে বিএনপি দাবি করেছে, অনেক কেন্দ্রে ভোটারদের ইভিএম মেশিনে আঙুলের ছাপ নিয়ে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা নৌকায় ভোট দিয়েছেন। ১৭০টি কেন্দ্রের মধ্যে অস্ত্রের মুখে ১২০টি কেন্দ্র দখল করে নিয়েছে আওয়ামী লীগের কর্মী ও কিছু সন্ত্রাসী। বিএনপির নেতাকর্মীকে মারধর এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে অন্তত ৫০ জনকে আহত করেছে।
এদিকে শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে দলীয় পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে ‘ভোট জালিয়াতির চিত্র’ তুলে ধরেন বিএনপি নেতা ও দলীয় প্রার্থী আবু সুফিয়ান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ, প্রশাসন ও দলীয় সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে তথাকথিত ইভিএমের মাধ্যমে ডিজিটাল জালিয়াতি করেছে। এতে আবারও প্রমাণ হয়েছে, ইভিএমের মাধ্যমে ভোট ডাকাতি করা যায়। এটি মধ্যরাতের নির্বাচনের মতো আরেকটি কৌশল। ইভিএম এখন মহাপ্রতারণার নতুন পদ্ধতি। এতে ডিজিটাল ডাকাতির পর অভিযোগ করারও সুযোগ নেই। একজন ভোটার কোথায় ভোট দিলেন তা নিজে জানারও সুযোগ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন বলেন, ২২ শতাংশ ভোটের মধ্যে ৫ শতাংশ দিয়েছেন ভোটাররা আর ১০ শতাংশ ভোট দিয়েছেন প্রিজাইডিং অফিসার নিজে। বাকিগুলো ভোট কেন্দ্র দখল করে পাসওয়ার্ড নিয়ে আওয়ামী লীগের কর্মী-সন্ত্রাসীরা দিয়েছে।
এতোসব অভিযোগ-অনুযোগের পরও বিএনপি নেতারা মনে করছেন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় বিএনপির অনেক প্রাপ্তি ঘটেছে। বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, যেহেতু একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আমি এই আসন থেকে নির্বাচন করেছি, সুতরাং উপনির্বাচনেও আমাদের অংশগ্রহণটা জরুরি ছিল। তাই দল আমাকেই মনোনয়ন দেয়। এতে চট্টগ্রাম বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী সক্রিয় হয়ে ওঠেন এবং যার যার অবস্থান থেকে আন্তরিক ভূমিকা রাখেন। এছাড়া এই নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করে কিভাবে ভোট কারচুপি করা যায় তা আবারও দেশের জনগণ জানতে পেরেছে এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ভোট কেন্দ্র দখল করে একতরফা ভোট গ্রহণ করে যে ন্যাক্কারজনক ভূমিকা পালন করেছে তাও দেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এসব আমাদের প্রাপ্তি বলে মনে করছি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল