চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার পূর্ব জোয়ারা এলাকায় দশ মাসের শিশুর দেহে শনাক্ত হয়েছে করোনাভাইরাস। চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য প্রশাসনের কাছে আজ পর্যন্ত এই শিশুই দেশের সবচেয়ে কম বয়সী করোনা আক্রান্ত রোগী। কিন্তু কেন, কিভাবে, কোন বাহকের মাধ্যমে অবুঝ এই শিশুর মধ্যে মরণঘাতি এ ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে তার খোঁজ শুরু করেছে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য প্রশাসন। চলছে এ শিশু রোগীর বাহকের অনুসন্ধান। বর্তমানে শিশুটি চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিশুটির বাবা প্রবাসী। মায়ের সঙ্গে ফুফুর বাড়িতে থাকে। চলতি এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে করোনা আক্রান্ত শিশুটির নিউমোনিয়া হয়। তখন তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করান তার মা। চমেক দুই সপ্তাহ চিকিৎসার পর ১২ এপ্রিল হাসপাতালের ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে। বাড়িতে আসার দুইদিন পর পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়লে ১৪ এপ্রিল চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক চমেক হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্র মতে ওষুধ খেতে বলেন। তবুও শিশুটির মা পরদিন আবারো পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক একই চিকিৎসা দিলে শিশুটিকে বাড়িতেই নিয়ে আসা হয়। ১৭ এপ্রিল তার জ্বর আর শ্বাসকষ্ট বাড়লে তাকে চমেক হাসপাতালের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ২০ নম্বর শয্যায় ভর্তি করা হয়। এর সময় তার নমুনা সংগ্রহ করে বিআইটিআইডিতে পাঠানো হয়। এরপর গত মঙ্গলবার রাতে বিআইটিআইডির নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘১০ মাস বয়সী একটি শিশু কিভাবে সংক্রমিত হয়েছে তা বলা যাচ্ছে না। তবে সব হিস্ট্রি শুনে তিনটি বিষয় আমাদের বিবেচনায় আসছে। শিশুটির নিজের বাড়ি, ফুফুর বাড়ি এবং চমেক হাসপাতালের ওই ওয়ার্ড। এ তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে শিশুটির করোনার বাহককে খোঁজা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ফুফুর বাড়ি ও নিজের বাড়ি লকডাউন করেছে প্রশাসন।’
চমেকের অধ্যক্ষ শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শামীম হাসান বলেন, ‘হাসপাতালের ওই শিশু ওয়ার্ডে ১০-১২ জন চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ড বয় কাজ করেছেন। তাই বিষয়টি আমরা বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার