করোনা পরিস্থিতিতে বাদানুবাদে জড়িয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং নগর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী।
বুধবার দুপুরে করোনা পরিস্থিতির একমাস পর আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের আহ্বানে এক সভা হয়। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত সভায় নগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় চিকিৎসক নেতা ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরীকে ইঙ্গিত করে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দলের অনেক পদধারী সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। এটা দিচ্ছে না, ওটা দিচ্ছে না বলে ভয়ের সৃষ্টি করছেন। তাদেরকে কিন্তু আগে দেখিনি। একজন পেশাজীবী নেতা ফেসবুকে গিয়ে ওটা নাই, এটা নাই বলে ভাষণ দিচ্ছেন। তিনি ডাক্তারদের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। দলের পদে থেকে কিভাবে কথা বলতে হয়, সেটি ভাবা উচিত।’
এসময় নওফেল তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন। এদিকে, শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেলের বক্তব্যের পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিজের ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানান ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী।
উপমন্ত্রী নওফেলকে ইঙ্গিত করে তিনি লিখেন, ‘কে হঠাৎ করে পদ-পদবি পেয়েছে জনগণ জানে, আমরা যখন এরশাদবিরোধী আন্দোলন আর চারদলীয় জোটের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি তখন অনেকে ফিডারে করে দুধ খেতেন। আমি কারো করুণায় পেশাজীবী এই পদে আসি নাই, ১৪০০ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে এই পদে এসেছি। আর দলীয় পদ যোগ্যতা বলে জননেত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন, পিতৃ পরিচয়ে নয়।
আর যাহা সত্য চিকিৎসকদের স্বার্থে তাহাই বলেছি, ভবিষ্যতে ও বলব, চিকিৎসকরা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন চিকিৎসকদের স্বার্থের কথা বলার জন্য। দুর্নীতিবাজ যারা এই সরবরাহ চেইনের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে বলেছি, সরকারের বিরুদ্ধে নয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পিপিই, মাস্ক এর দুর্নীতির বিরুদ্বে অবস্থান নিয়েছেন, সেখানে আপনার বক্তব্য প্রকারন্তরে দুর্নীতিবাজদের পক্ষেই গেছে, মনে হচ্ছে এই সরবরাহ চেইনের সাথে আপনারাও জড়িত? যেখানে নিম্নমানের পিপিই, মাস্ক সরবরাহ করা এবং জেনুইন N95 musk না দেয়ার কারণেই তো ২৩১ জন চিকিৎসকসহ ৫০০-এর মত চিকিৎসা-সেবাকর্মী আক্রান্ত।
এখনো সন্মুখযুদ্বে আমরাই আছি, আপনি নয়। আমার চিকিৎসক ভাইদের থাকা খাওয়ার জন্য কি দিয়েছেন? কোথায় থাকছেন, কি খাচ্ছেন খবর রেখেছেন? রাখেননি। রেখেছেন দুই জন জনপ্রতিনিধি একজন আ জ ম নাছির উদ্দিন, আর একজন এমপি ওয়াসিকা আপা, এখনো তাদের দু'জন আর দু'জন দানবীর ব্যবসায়ীর আর্থিক সহায়তায কোয়ারান্টাইনে থাকা চিকিৎসা সেবাকর্মীদের খাওয়া-দাওয়া চলছে। যা আমি ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম।
৯১-৯২ সালে জোট সরকারের আমলে রক্ত আমার শরীর থেকে ঝরেছে, আপনার শরীর থেকে নয়।আমাদের রক্তের উপর দিয়ে N95 musk পরে সরকারি গাড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পতাকা লাগিয়ে। যদি পারেন চট্টগ্রমের চিকিৎসক ও চিকিৎসাসেবা কর্মীদের জন্য মানসন্মত পিপিই ও এন ৯৫ মাস্কসহ অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যবস্থা করেন।’
এদিকে, করোনা পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল দুই নেতার বক্তব্য দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের শত্রু আওয়ামী লীগ। বিএনপি-জামায়াতকে আর প্রয়োজন হবে না।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন