চট্টগ্রাম মহানগরে অনুমোদিত স্থায়ী-অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট ছয়টি। কিন্তু বর্তমানে নগরের সড়ক, অলিগলি, উন্মুক্ত মাঠ, সড়কের পাশেসহ বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বসানো হয়েছে অস্থায়ী পশুর হাট। ফলে বিপাকে পড়েছেন বৈধ ইজারাদার। শঙ্কা দেখা দিয়েছে লোকসানের। দুষিত করছে পরিবেশ।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নগরের পশুর হাট ইজারা দিয়ে থাকে। এ নিয়ে চসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান পরিচালনা করে জরিমানাও করেছেন। তবে পশুর কোনো সংকট নেই।
জানা যায়, চসিক এবার স্থায়ী-অস্থায়ী মোট ছয়টি পশুর হাট অনুমোদন দেয়। এর মধ্যে স্থায়ী হাটগুলো হল- সাগরিকা বাজার, বিবিরহাট ও পোস্তার পাড় ছাগলের হাট। অস্থায়ী তিনটি পশুর হাট হল- নুর নগর হাউজিং এস্টেট মাঠ, সল্টগোলা রেলওয়ে ক্রসিং সংলগ্ন মাঠ এবং দক্ষিণ পতেঙ্গার বাটারফ্লাই পার্কের দক্ষিণে টিকে গ্রুপের খালি মাঠ।
কিন্তু এখন নগরের বিভিন্ন সড়ক, অলিগলি ও খালি মাঠেও ব্যক্তি উদ্যোগে গরু, মহিষ ও ছাগল বিক্রি করা হচ্ছে। অবৈধভাবে পশু বিক্রির কারণে বৈধ বাজারগুলো লোকসানের মুখে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত মঙ্গলবার নগরের হালিশহর দক্ষিণ কাট্টলী এলাকার ডা. বদিউল আমীন বাড়ি সংলগ্ন, গলিচিপা পাড়া ও সাগরপাড় রোডে অবৈধভাবে কোরবানির পশুর হাট বসানোর অভিযোগে চার ব্যক্তিকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
চসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী বলেন, অবৈধভাবে পশুর হাট বসানোর অভিযোগে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে জরিমানাও করা হয়েছে। চেষ্টা করছি, অবৈধ পশুর হাটগুলোকে উচ্ছেদ করতে। বিষয়টি আমরা মনিটরিং করছি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নগরের বাকলিয়া এলাকার বিভিন্ন স্থানে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বসানো হয়েছে পশুর বাজার। গনি বেকারি মোড়, দারুল উলুম মাদ্রাসা সড়ক, ডিসি রোড, পাথর ঘাটা, হালিশহরের বিভিন্ন সড়ক ও মোড়ে অস্থায়ীভাবে পশুর হাট বসানো হয়েছে বলে জানা যায়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর চট্টগ্রামে পশুর (গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া) লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ লাখ ২১ হাজার। এর বিপরীতে প্রস্তুত আছে ৭ লাখ ৯১ হাজার ৫০১টি। চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলা এবং মহানগর এলাকার তিনটি থানার ৮ হাজার ১৭১ জন খামারি মিলে ৭ লাখ ৯১ হাজার ৫০১টি পশু পালন করা করেছে।
এর মধ্যে মিরসরাই থানায় ৩৫৯, সীতাকুণ্ডে ২২০, সন্দ্বীপে ১২২, ফটিকছড়িতে ৩৩৬, রাউজানে ৪৪০, রাঙ্গুনিয়ায় ৪৩৭, হাটহাজারীতে ৫৩৪, বোয়ালখালীতে ৫১২, পটিয়ায় ৯৯৭, চন্দনাইশে ৬৫২, আনোয়ারায় ৮১০, সাতকানিয়ায় ৪৩৭, লোহাগাড়ায় ৭১৫, বাঁশখালীতে ৩২৪, কর্ণফুলীতে ৭৭৫, কোতোয়ালীতে ১১৭, ডবলমুরিংয়ে ১৩৯, পাঁচলাইশের ২৪৫ জন খামারি মোট ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮০৩টি গরু, ৬৬ হাজার ২৩৭টি মহিষ, ১ লাখ ৮৯ হাজার ৩৬২টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য ৯৯টি পশু লালন-পালন করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর