৬ আগস্ট, ২০২২ ১৬:২৪

ভরা মৌসুমেও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ চ্যানেলে মিলছে না ইলিশ

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম:

ভরা মৌসুমেও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ চ্যানেলে মিলছে না ইলিশ

ফাইল ছবি

টানা ৬৫ দিন পর মাছ শিকারে নেমেও চলতি ভরা মৌসুমেও কাংখিত ইলিশ মিলছে না বঙ্গোপসাগরের চট্টগ্রাম সীতাকুন্ডের সন্দ্বীপ চ্যানেলে। গভীর সমুদ্রে গিয়েও তেমন ইলিশ মাছ না পেয়ে অনেকটা হতাশ হচ্ছেন জেলেরা। তবে বৃষ্টি না থাকায় সাগরে মাছের সংখ্যা কিছুটা কম হচ্ছে। এতে বৃষ্টি হলেই ইলিশের দেখা মিলবে বলে জানান মৎস্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীলরা।

সীতাকুন্ড এলাকার জলদাশ নামের এক জেলে বলেন, গত ২৩ জুলাই রাত ১২টার পর থেকে সাগরে যাই মাছ শিকারের আশায়। কিন্তু গভীর সাগরে গিয়ে জাল ফেলে চরম হতাশ হতে হয়েছে। একটি নৌকাতে ৫-৭ জন কিংবা বড় নৌকায় আরো বেশি জেলে একসাথে মাছ শিকারে যাই। এসব নৌকায় প্রতিজালে ৫০ হাজার থেকে কয়েক লাখ টাকারও ইলিশ পেতাম আগে। কিন্তু এবার এত দূরে গভীর সমুদ্রে গিয়ে ২-৪ হাজার টাকার মাছ নিয়ে ফিরতে হচ্ছে। তাও আবার বেশিরভাগ ছোট সাইজের মাছ।

আরেকজন জেলে বলেন, ইলিশ শিকার শুরু হওয়ার পর একটি অমাবস্যার জোঁ গেছে। অতীতে এসব জোঁতে প্রচুর ইলিশ পেয়েছি। কিন্তু এবার জোঁতেও জাল ফাঁকা। এক নৌকায় ৬ জন গিয়ে জনপ্রতি ২-৩শ টাকাও পাইনি। 

উপজেলা মৎস্য অফিসার কামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, গভীর সাগর থেকেও চ্যানেলগুলোর দিকে ইলিশ কম আসছে। তাই ইলিশ ধরা কম পড়ছে। কিন্তু যারা গভীর সমুদ্রে জাল ফেলছে তাদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে বলে দাবি করেন তিনি।

স্থানীয় ও মৎস অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের শুধুমাত্র সীতাকুন্ড উপজেলায় মোট ৩৮টি জেলে পল্লী আছে। এসব পল্লীতে বসবাসকারী অর্ধ লক্ষাধিক জেলের জীবন চলে সাগরে মাছ শিকার করে। সারাবছর বিভিন্ন প্রকার মাছ শিকার করলেও তাদের মূল লক্ষ্য থাকে বর্ষায় ইলিশ শিকার। মূলত বর্ষায় এই ইলিশ শিকার ও বিক্রির টাকাতেই পুরো বছর সংসার চলে তাদের। বলাবাহুল্য প্রতিবছর বর্ষার মৌসুমে সীতাকুন্ডের স›দ্বীপ চ্যানেলে অনেক বেশী পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ে। যা বিক্রি করে জেলেদের নানা সমস্যার সমাধান করেন। এই ইলিশের মৌসুম ছিল মূলত জুন-জুলাই-আগস্টেই। কিন্তু কয়েক বছর ধরে সরকার মে মাস থেকে জুলাই মাসের  মোট ৬৫ দিন পর্যন্ত সাগরে মাছ শিকার সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ করেন।

সূত্রে আরো জানা গেছে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে ইলিশ আহরণের অন্যতম এলাকা বাড়বকুন্ড, বাঁশবাড়িয়া বোয়ালিয়াকূল, কুমিরা-স›দ্বীপ ঘাট, ভাটিয়ারী ও সলিমপুর সাগর উপকূলে ঘুরে উপকূলীয় জেলে পরিবারগুলোর মধ্যে চরম হতাশা দেখা গেছে। তবে তাদের আশা এখনো ভারী বৃষ্টি হলেই মাছ পেতে পারে। ইলিশ শিকারের নানা অভিজ্ঞতার কথা জেলেরা জানালেও উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সীতাকুন্ডে ইলিশ কম শিকার হলেও এখনো গড়ে প্রতিদিন ১০ টন আহরণ হচ্ছে। 

বিডি প্রতিদিন/এএম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর