চট্টগ্রামের বাজারে ঝাল বেড়েছে কাঁচা মরিচের। সপ্তাহের ব্যবধানে মরিচের কেজিতে বেড়েছে ৯০ টাকা। তবে আগের তুলনায় সবজির বাজারে স্বস্তি ফিরেছে। বাজারে দেশি পিঁয়াজের সরবরাহ কম। দেশি পিঁয়াজের চাহিদা থাকলেও বাজার দখল করেছে পাকিস্তানি ও চীনের পিঁয়াজ। অপরদিকে ভারত থেকে পিঁয়াজ আমদানি কম হওয়ার সুযোগে বাজারে রাজত্ব করছে চীন ও পাকিস্তানি পিঁয়াজ। যদিও কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বলছে, দাম বাড়ানোর কৌশল হিসেবে সংকট সৃষ্টি করেছে দেশি পিঁয়াজের। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মূল কারণে দেশি পিঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাবের সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, পিঁয়াজের যখন সরবরাহ কমে যায়, তখন দাম বাড়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু যখন সরবরাহ বাড়ে; তখন দাম কমনোর চিন্তা তাদের থাকে না। এখন দেশি পিঁয়াজ নেই বলে দাম বাড়ানোর নতুন উপায় বের করছে তারা। এটা হলো তাদের আকেটা কারসাজি; সেটারই ইঙ্গিত। আর ব্যবসায়ীরা যে ইচ্ছে করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে পারে; সেটা সবারই জানা।
খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, চট্টগ্রামে দেশি পিঁয়াজের সরবরাহ নেই। যার কারণে দেশি পিঁয়াজশূন্য চট্টগ্রাম। তবে ভারতীয়, পাকিস্তানি এবং চায়না পিঁয়াজ রয়েছে। দাম বেশি থাকলেও বিদেশি পিঁয়াজের তুলনায় দেশি পিঁয়াজের চাহিদা সবস সময় বেশি থাকে। সরবরাহ সংকটের কারণে মূলত দাম একটু এদিক-সেদিক। তবে তুলনামূলকভাবে দাম ঠিক আছে।
এদিকে হঠাৎ দেশি পিঁয়াজশূন্য হয়ে পড়েছে দেশের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ-চাক্তাইয়ের আড়তগুলো। ভারতীয় পিঁয়াজের সরবরাহ কম থাকার কারণে বাজারে রাজত্ব করছে পাকিস্তানি এবং চীনা পিঁয়াজ। এরইমধ্যে গত ১৩ দিনে চট্টগ্রামে দেশি পিঁয়াজের কোনো চালান আসেনি। আগের চালানে আসা পিঁয়াজ দিয়েই চলেছে এতদিন। ভারত থেকে পিঁয়াজ আমদানি এখন কম ও দেশি পিঁয়াজের সরবরাহ না থাকার কারণে পিঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এরপরও পাকিস্তানি-চায়না কিছু পিঁয়াজ আসার কারণে মোটামুটি দাম স্থির রয়েছে। যদিও এসব পেঁয়াজে পাইকারীতে প্রতিকেজি ২ টাকা করে বেড়েছে দাম। ভারতীয় পিঁয়াজ প্রতিকেজি ৯৫ থেকে ৯৭ টাকা, পাকিস্তানি ৮০ টাকা, চীনা ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জানা যায়, গত সপ্তাহে বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা করে। এ সপ্তাহে কেজিতে ৯০ থেকে ১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা করে। এ সপ্তাহে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। একই সময়ে ১০ টাকা বেড়ে বেগুন ৮০ ও শসা ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। তবে ১০ টাকা কমে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হয় বরবটি। অন্যান্য সবজির মধ্যে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় পটল, ঢেঁড়স ও পেঁপে। এর বাইরে মিষ্টি কুমড়া ৫০, করলা ৭০, কাকরল ৮০, ঝিঙে ৯০, টমেটো ১৪০ এবং গাজর ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। কেজিতে ২০ টাকা কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। তবে ২০ টাকা দাম বেড়েছে সোনালি মুরগির। ব্রয়লার মুরগি ১৬০ টাকা, সোনালি ৩১০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এছাড়া গরুর মাংস ৮৫০ থেকে ১ হাজার ৫০ এবং ছাগলের মাংস ১ হাজার ৫০ থেকে ১১শ ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে মাছের দাম। নগরে আকারভেদে রুই ২৮০ থেকে ৩৬০, কাতলা ৩৪০ থেকে ৩৮০, মৃগেল ২২০-২৬০, আকারভেদে পাঙাস ১৮০-২২০, তেলাপিয়া ২০০-২২০, স্যালমন ফিশ ৪৫০, বাগদা চিংড়ি ৮০০, রূপচাঁদা জাত ও আকার ভেদে ৫৫০ থেকে ৭০০, পোয়া মাছ ২৫০, পাবদা ৪০০, সুরমা ৩৫০ থেকে ৫৫০, টেংরা ৩৭০ এবং নারকেলি মাছ ২৫০ টাকা এবং কৈ মাছ ৪৫০ কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল