গাজীপুরে শাশুড়িকে হত্যার দায়ে পুত্রবধূ রোজিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আসামিকে আরও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ কে এম এনামুল হক এ রায় প্রদান করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত রোজিনা গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. পারভেজের স্ত্রী।
গাজীপুর আদালতের পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম জানান, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক উত্তরপাড়া এলাকার পারভেজের সঙ্গে রোজিনার বিয়ে হয়। এরপর শাশুড়ি পারভিনের সাথে মাঝে মধ্যে তার ঝগড়া হতো। ২০১৫ সালের ১৫ জানুয়ারি পারভেজ তার মা ও স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে তার এক আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে যান। পরদিন সকাল ৮টার দিকে বাড়িতে এসে পাভেজ স্ত্রীকে একা দেখতে পায় এবং মায়ের কক্ষে তালা লাগানো দেখে স্ত্রীর কাছে মায়ের কথা জানতে চাইলে স্ত্রী একেক সময় একেক কথা বলতে থাকে। এক পর্যায়ে রোজিনা পালানো চেষ্টা করে। তখন এলাকার লোকজনের সহায়তায় তাকে আটক করা হয়। পরে মায়ের কক্ষের বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি মেরে মায়ের মাথা থেতলানো লাশ পড়ে থাকতে দেখেন পারভেজ।
সে সময় স্বামী পারভেজ স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলে রোজিনা জানান, ১৫ জানুয়ারি দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে শাশুড়িকে ঘুমন্তাবস্থায় পেয়ে রোজিনা শাশুড়ি পারভিনকে কুড়াল দিয়ে মাথায় কুপিয়ে খুন করে। বিয়ের পর থেকে শাশুড়ির সাথে রোজিনার বনিবনা না হওয়ায় সেদিন শাশুড়িকে বাড়িতে একা পেয়ে তাকে খুন করেছে। ওই ঘটনায় পারভেজ ১৬ জানুয়ারি কালিয়াকের থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
রোজিনার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় ওই বছরের ৩১ মে পুলিশ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। পরে ১৬ নভেম্বর রোজিনার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। গঠিত অভিযোগ আসামিকে পাঠ করে শুনানো হলে রোজিনা নিজেকে নির্দোশ দাবি করে বিচার প্রার্থনা করেন। পরে তিনি আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে দীর্ঘ শুনানীর পর গাজীপুর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ কে এম এনামুল হক রোজিনাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকার অর্থ দণ্ডাদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে গাজীপুর আদালতের পিপি মো. হারিছ উদ্দিন আহমদ এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. মোস্তাফিজুর রহমান মিন্টু মামলার শুনানি করেন। মামলায় ১৩ জন সাক্ষী দেন।
বিডি-প্রতিদিন/১০ মে, ২০১৬/মাহবুব