ভেঙে ফেলতে হবে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের ১৮তলা ভবনটি। ভবনটিকে হাতিরঝিলের বিষফোড়া আখ্যায়িত করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। ভবনটি ভাঙা সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে করা আপিল বৃহস্পতিবার খারিজ করে দেন উচ্চ আদালত।
এদিন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে এ আদেশ দেন। আইনজীবী মনজিল মোরশেদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আইনজীবী মনজিল মোরশেদ বলেন, আপিল বিভাগ বলেছেন, দেশের সবচেয়ে সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থান হাতিরঝিলের জন্য বিজিএমইএ ভবন একটি বিষফোড়া।
এর আগে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিজিএমই ভবন ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দিয়েছিলেন। রায়ে বলা হয়, ভবন ভাঙার সকল ব্যয় বিজিএমইএকেই বহন করতে হবে। এছাড়া এই ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ফৌজদারি অপরাধের বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই ভবনের জায়গাসহ রাজধানীর কাওরান বাজারের বেগুনবাড়ি-হাতিরঝিল প্রকল্পের মূল পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতে হবে বলে আদালত রায়ে বলেন। তারপর হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ২০১৩ সালের ২৩ মে লিভ টু আপিল দায়ের করেন বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের রায় রায় স্থগিত করে দেন।
আজ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে বিজিএমইএর পক্ষে ব্যারিস্টার রফিকুল হক ও অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহুববে আলম। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন।
আদালত বলছেন, হাতিরঝিলের লেককে কেন্দ্র করে সৌন্দর্য বর্ধনের প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এই ভবনের কারণে সেই সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। এটি একটি বিষফোঁড়া।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ভবনটি ভাঙার উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা অক্ষত থেকে যায়। সর্বশেষ ২০০৯ সালের ১৭ মার্চ রাজউক সেনা সদস্যদের সহায়তায় বিজিএমইএ ভবনের সামনের টিনশেড স্থাপনা ভেঙে দেয়।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ