রমজানের প্রথম দিন। পড়ন্ত বিকেলের শেষ সময়। সূর্য তখন ডুবি ডুবি। কিন্তু আগের দিনের চেয়ে এ দিনটা অনেকের কাছেই ব্যতিক্রম। বিকেল হতেই সকলেই ব্যতিব্যস্ত ইফতার নিয়ে। সন্ধ্যার আগেই ইফতার নিয়ে ফিরতে হবে বাসায়। তাই সকলের গন্তব্য অভিন্ন।
মঙ্গলবার রজমানের প্রথম দিনেই চট্টগ্রামের হোটেলগুলোতে মুগ্ধতার সব আবেশ নিয়ে ইফতারির পসরা সাজানো হয়। প্রতিটি দোকানে শোভা পাচ্ছিল চট্টগ্রামের ঐতিহ্যময় সব খাবার। সঙ্গে ছিল আধুনিক রসনাও। দোকানিরা সমন্বয় ঘটিয়েছেন ঐতিহ্য ও আধুনিকতার। রসনা-তৃপ্তির বৈচিত্র্যময় সব পদ দিয়ে সাজানো হয় ইফতারির সব পণ্য। পাঁচ তারকা হোটেল থেকে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের ক্রয় ক্ষমতার সব হোটেলই বৈচিত্রময় ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসে।এসব দোকানে আছে নতুন আইটেমের প্যাকেজ, রয়েছে বিশেষ ছাড়ও। প্রতিটি দোকানে ছিল উপচে পড়া ভিড়।
নগরীর পাঁচ তারকা হোটেল র্যাডিসন ব্লু চিটাগাং বে ভিউ, তিন তারকা মানের হোটেল দি পেনিনসুলা, হোটেল আগ্রাবাদের আছে বিশেষ বিশেষ আকর্ষণীয় ইফতারি। তাছাড়া মনভোলানো আয়োজন নিয়ে আছে ওয়েল পার্ক, এম্ব্রোসিয়া, রেড চিলি, ওহ চিটাগাং, সিলভার স্পুন, বোনানজা, তাবা, হ্যান্ডি, ক্যান্ডি, মেরিডিয়ানসহ অভিজাত-হোটেল রেস্তোরা।
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে ছিল মেজবানি মাংস, এরাবিক স্পেশাল ক্লুজিং, নানা পদের হালিম, ফিরনি, চিকেন রোল, জিলাপিসহ নানা স্বাদের ইফতারি।
হোটেল পেনিনসুলায় রাখা হয়েছে চিকেন চাম্বুসি, সাসলিক, মাশরুম পাপ, ললিপপ, চকলেট চিকেন ললিপপ, কোরাল মাছের মালপানসহ নতুন নতুন আরো নানা খাবার।
হোটেল আগ্রাবাদে রয়েছে ইফতারের বর্ণিল আয়োজন। টেকওয়েতে থাকছে ৫২ পদের ইফতার। চমৎকার স্বাদের আকর্ষণীয় সব ইফতার আইটেম দিয়ে সাজানো হয়েছে বেশ কয়েকটি ইফতার বক্স। একজন রোজাদারকে দিতে হবে মানভেদে ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। ইফতার বক্সের সঙ্গে আছে বিভিন্ন ফলের জুস। আছে ইফতার পার্টির ব্যবস্থা, ব্যুফে ইফতার ও ডিনারের ব্যবস্থা। স্পেশাল আইটেমে রয়েছে চিকেন বোন, বিফ হালিম, চিকেন আকনি, মাটন হালিম।
ওয়েল ফুডে আছে চারটি সেট মেনু। এগুলো দাম ৬৫০ থেকে এক হাজার টাকা। আছে চার ধরনের টেকওয়ে বক্স। ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। তাছাড়া আছে এরাবিয়ান স্পেশাল ক্লুজিং নামের প্যাকেজ। এই প্যাকেজের মূল্য ১০ জনের প্যাকেজ ১৪ হাজার টাকা, ১৫ জনের প্যাকেজ ২০ হাজার ও ২০ জনের প্যাকেজ ২৫ হাজার টাকা।
জিইসি মোড়ের বোনানজা রেস্টুরেন্টে ইফতার আইটেম থাকছে প্রায় ৩০ প্রকারের। বোনানজার নতুন আকর্ষণ মোরগ মুসল্লাম। প্রতিটির দাম ৬০০ টাকা। বিফ মেজবানি প্রতিকেজি ৬০০ টাকা, রেশমি জিলাপি প্রতিকেজি ৩৮০ টাকা, মাটন হালিম ৪৫০ টাকা, চিকেন হালিম ৪২৫ টাকা। সেট ইফতার মেনুতে আছে ৩৭৫, ৪৫০, ৪৭৫ ও ৫২৫ টাকা। ইফতার উইথ ডিনারে থাকছে জনপ্রতি ৭০০ ও ৭৫০ টাকার দুইটি সেট।
হান্ডি ইন্ডিয়ান ব্রিস্টোতে আছে গরু, মুরগি ও খাসির মাংসের হালিম। বড় এক হাড়ির দাম ৪৫০ টাকা। চিকেন ও মাটন হালিমের দামও একই। এর বাইরে ৫০ টাকায় বাটার নান, ৬০ টাকায় আলু পরটা, ৭০ টাকায় চিকেন মোগলাই পরোটা থেকে শুরু করে সব মজাদার আইটেম থাকছে। এখানকার সবচেয়ে দামি পদটি হচ্ছে ৯৫০ টাকার মূল্যের মাটন রান-ই-সেকান্দারি।
আগ্রাবাদের অভিজাত রেস্টুরেন্ট অ্যামব্রোশিয়ায় সাত দিনের জন্য সাতটি মেনু থাকবে। ইফতার ও ডিনারে আছে আকর্ষণীয় ২০ থেকে ২৫টি পদ।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ