আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের দু'গ্রুপের মধ্যে ফের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ তিনজন জীবন, বাপ্পি, ইমামকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে এবং নাজমুল ও হৃদয়কে বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাস ও আশপাশ এলাকায় দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া দুটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি এবং স্থানীয় যুবলীগ নেতা নুরু মোস্তাফা টিনু। সংঘাতে জড়িয়ে পড়া দুটি গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলে আসছিল। তারা গত এক মাসে কমপক্ষে ১০ বার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
চকবাজার থানার ওসি আজিজ আহমেদ বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু'গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন।’
নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি বলেন, ‘টিনুর নেতৃত্বের বহিরাগতরা গত কয়েকদিন ধরে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের ওপর হামলা করে আসছিল। রবিবারও তারা অবৈধ ভাবে কলেজে প্রবেশ করতে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করে। এসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা বহিরাগতদের প্রতিহত করে। বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না পেরে হামলা চালায়।’
জানা যায়, রবিবার সকালে টিনুর অনুসারিরা জঙ্গিবাদ বিরোধী মানববন্ধন করে। তারা মিছিল নিয়ে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব হয়ে ফের চট্টগ্রাম কলেজে আসে। পরে টিনু অনুসারীরা চট্টগ্রাম কলেজে প্রবেশের চেষ্টা করলে রনির অনুসারী ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা তাদের বাধা দেয়। এসময় উভয় পক্ষ দফায় দফায় সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ চলাকালে গুলি বিনিময়, ককটেল বিষ্ফোরণ এবং ইট পাটকেল নিক্ষেপের কারণে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে ৩ জন গুলিবিদ্ধসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের চমেক হাসপাতাল এবং বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
গত বছরের বিজয় দিবসে শহীদ মিনারে ফুল দেয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও শিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর প্রায় তিন যুগ ধরে দখলে থাকা চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজ নিয়ন্ত্রণে নেয় ছাত্রলীগ। কলেজ দুটিতে ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিজেরাই অন্তকোর্ন্দলে জড়িয়ে পড়েন। এরপর থেকে ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপের মধ্যে বার বার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী ও নগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি এবং অপর গ্রুপটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির অনুসারী হিসেবে পরিচিত যুবলীগ নেতা টিনু।
বিডি-প্রতিদিন/ ৩১ জুলাই, ২০১৬/ আফরোজ