টঙ্গী কলেজ গেট এলাকায় বোমা ফাটিয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জেএমবি'র শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নান ও তার সহযোগীদের ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টাকালে মোস্তফা কামাল (২২) নামে এক জেএমবি সদস্যকে আটক করা হয়েছে। আজ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বেশ কয়েকটি গ্রেনেড, বোমা ও ধারালো চাপাতিসহ টঙ্গী থানা পুলিশ তাকে আটক করে। আটক মোস্তফা কামাল ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানা পাগলি গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে।
পুলিশ জানায়, জেএমবি’র শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নান ও তার ১৭জন সহযোগীকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে সকালে ঢাকার আদালতে হাজিরার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে হাজিরা শেষে তাদেরকে পুলিশের একটি প্রিজনভ্যানে করে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তাদের বহনকারী প্রিজনভ্যানটি বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে টঙ্গী কলেজগেট এলাকায় পৌঁছলে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা জেএমবি সদস্য মোস্তফা কামাল ও তার অপর দুই সহযোগী প্রিজনভ্যান ও পুলিশ প্রটেকশনের গাড়িকে লক্ষ্য করে উপর্যুপরি বেশ কয়েকটি বোমা নিক্ষেপ করে। বোমার ধোঁয়ায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কলেজগেট ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এতে রাস্তায় চলাচলরত সাধারণ মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে দিগ্বিদিক ছুটাছুটি করতে থাকেন। এসময় এলাকাবাসী ধাওয়া দিয়ে মোস্তফা কামালকে আটক করলেও তার অপর দুই সহযোগী পালিয়ে যায়। পরে থানায় খরব দিলে টঙ্গী থানা পুলিশের এসআই আবুল খায়ের একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় তার সাথে থাকা ব্যাগে তল্লাশি করে নগদ ৭ হাজার ৯১৫ টাকা, ২টি হাত গ্রেনেড, ১টি মোবাইল, ৫টি বোমা, ২টি পেট্রোল বোমা, ২টি ধারালো চাপাতি ও কয়েকটি পায়জামা-পাঞ্জাবি উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে র্যাব, পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আটককৃতকে টঙ্গী থানায় রেখে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জেএমবি'র সদস্য মোস্তফা কামাল স্বীকার করেছেন তাকে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে কে বা কারা পুলিশের প্রিজন ভ্যানে বোমা মেরে আসামি ছিনিয়ে নেয়ার জন্য বলেছে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এর চেয়ে বেশি কিছু জানায়নি বলে জানিয়েছেন জিজ্ঞাসাবাদকারী পুলিশ সদস্যরা।
এবিষয়ে আসামি বহনকারী প্রিজনভ্যানের প্রটেকশনের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা জানান, আসামিবাহী প্রিজনভ্যানটিকে প্রটেকশন দিয়ে কলেজগেট পৌঁছার সাথে সাথে উপর্যুপরি কয়েকটি বোমা নিক্ষেপ করে জেএমবি'র সদস্যরা। তারা মুফতি হান্নানসহ তার সহযোগীদের ছিনিয়ে নেয়ার জন্যই হামলা করেছে বলে আমাদের ধারণা। দুটি বোমা বিষ্ফোরিত হলেও পুলিশ সদস্য আহত বা গাড়ির তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। আসামিদেরকে কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে টঙ্গী থানার ওসি মো. ফিরোজ তালুকদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মোস্তফা কামাল নামে একজন জেএমবি সদস্যকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার