চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হানাহানি-খুনোখুনির পেছনে ছাত্রলীগের একাধিক পক্ষের ট্রেন্ডার বাণিজ্য ও ভাগ-বাটোয়ারাই প্রধান কারণ বলে মনে করছেন অন্য নেতারা। তাই বছর না ঘুরতেই চবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য হলেন কেন্দ্রীয় নেতারা। গত বছরের জুলাই মাসে চবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার ৯৩ কোটি টাকার একটি ট্রেন্ডার নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগের দু’পক্ষ। সেই থেকে প্রতিমাসে গড়ে প্রায় ৮বার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধে ছাত্রলীগের একাধিক গ্রুপের মধ্যে। চলতি বছরের এপ্রিলে তিনটি প্রকল্পের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ৫১ কোটি টাকার দরপত্র আহবান করে। এই দরপত্র নিয়েও শুরু হয় নতুন করে হিসেব-নিকেশ। এই হিসেব নিকেশ আড়ালে রেখে শুরু হয় নতুন করে কোন্দল। ফলে এই কোন্দল থেকেই চবি ক্যাম্পাসে আবারও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়িয়ে পড়েন সংঘর্ষে।
এদিকে গত বৃহষ্পতিবারের ঘটনায় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সাতজন আহত হলে শুক্রবার ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদ কমিটি স্থগিত করতে বাধ্য হয়। মূলত চবি ছাত্রলীগের দুই অংশের একটি নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী এবং অপর অংশ সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসছে তাদের কার্যক্রম। সর্বশেষ এই দু’পক্ষের মহিউদ্দিন অংশের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন সদ্য স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি সুজন ও নাছির অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন স্থগিত কমিটির সভাপতি মো. আলমগীর টিপু। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল না থাকলেও তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ হয়ে গত তিনবছরে একাধিক খুন ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটায় বলে দাবি করেছেন চবি ছাত্রলীগের সাবেক কয়েকজন নেতা। এর মূলে ট্রেণ্ডারের ভাগ-বাটোয়ারা ও অবৈধ আর্থিক লেনদেনই প্রধান কারণ বলে মনে করছেন চবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।
এদিকে বর্তমান নেতারা সাবেক নেতাদের এমন অভিযোগকে ভিত্তিহীন জানিয়ে স্থগিত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপু বলেন, ট্রেণ্ডার বা অনৈতিক লেনদেনের সাথে ছাত্রলীগ জড়িত নেই। মূলত অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা এই সংঘর্ষের ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে। তারাই ঠুনকো বিষয়কেও গ্রুপিংয়ে নিয়ে সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। এদের চিহ্নিত করে কমিটি থেকে বহিস্কারের উদ্যোগ নিতে তিনি কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ কামনা করনে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার