নারায়ণগঞ্জে ঝুট ব্যবসায়ী সুমন মিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দোষীদের ফাঁসি দাবি করেছেন তাঁর পরিবার ও এলাকাবাসী।
সোমবার সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে পশ্চিম মাসদাইর এলাকাবাসীর ব্যানারে ওই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। পরে সেখান থেকে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নিহত সুমনের বাবা জলিলুর রহমান, মা ইসমত বেগম, স্ত্রী শিমু, ৮ বছরের ছেলে সম্রাট, ছোট ভাই নাঈম, ছোট বোন রিতা, বড় বোন সোনিয়া আক্তার সহ আত্বীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী।
কান্না জড়িত কন্ঠে নিহত সুমনের মা ইসমত বেগম বলেন, ‘আমার বাবারে ওরা ডাইকা নিয়া আগুনে পুড়ায়া মারছে। আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই। একটা নাতি রাইখা গেছে, আরেক সন্তান এখন পেটে আছে এই এতিমগুলা নিয়া আমি কই যামু। আমি এমপি সাহেবের কাছে বিচার চাই। প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চাই।’
প্রতিবেশী আলতাফ উদ্দিন বলেন, একজন ব্যবসায়ীকে এইভাবে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। হত্যার সময় হত্যাকারীদের নাম বলে গেছে তার পরেও প্রশাসন কাউকে গ্রেফতার করতে পারলো না। তাহলে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা কোথায়? গ্রেফতার করতে পারল না কেন আমরা এর জবাব চাই। আমরা প্রশাসনের কাছে জানাতে চাই কেন এমনটা করা হচ্ছে। আমার ভাই মৃত্যুর আগে এক মিনিট ৪০ সেকেন্ডের ভিডিওতে যে চার জনের নাম বলে গেছে তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
এসময় অন্যান্য বক্তাদের মুখেও অভিযুক্ত চার জনকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে তাদের উপযুক্ত বিচারের দাবি জানানো হয়।
প্রসঙ্গত সুমনের কাছ থেকে তার ব্যবসায়িক পার্টনার বিপ্লব ও সোহেল মণ্ডল ৭০ হাজার করে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা ঋণ নেয়। এক মাস পরে এ টাকা ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও তারা সুমনকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছিল। ৩১ আগস্ট শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টায় বিপ্লব টাকা দেয়ার কথা বলে মোবাইল ফোনে সুমনকে তাদের বাসায় ডেকে নেয়। সুমন সেখানে যাওয়ার পর বিপ্লবের স্ত্রী শায়লা, সোহেল মন্ডল, হোটেল মাসুদ মিলে সুমনকে ঝাপটে ধরে রাখে। পরে বিপ্লব সুমনের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সুমন সেখানে আগুনে পোড়ানোর পুরো ঘটনার বর্ণনা দেয়। শনিবার সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমনের মৃত্যু হয়।
বিডি-প্রতিদিন/ ই-জাহান